সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পণের জন্য শ্বশুরবাড়িতে নববধূকে অত্যাচারের ঘটনা তো আকছারই ঘটে। বস্তুত, পণের জন্য যদি সদ্য বিবাহিতাকে মরতে হয়, তাহলেও অবাক হওয়ার দিন ফুরিয়েছে। তাই বিহারের এক অবসরপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক নিজের ছেলের বিয়েতে চার লক্ষ টাকা পণ নিয়েছেন। এই খবরেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু ঘটনা হল, বিয়ের আগেই পণের টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন বিহারের ভোজপুর জেলার বাসিন্দা হারিন্দ্র সিং।
[বিরোধীরা আমার ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করার কে, পালটা তোপ যোগীর]
কথায় বলে, শিক্ষকরা দেশ তৈরির কারিগর। ভোজপুর জেলার জগদীশপুরের কৌরা গ্রামের একটি স্কুলে প্রধানশিক্ষক ছিলেন হারিন্দ্র সিং। ডিসেম্বরে তাঁর ছোট ছেলে রঞ্জন সিংয়ের বিয়ে। বিয়েতে চার লক্ষ টাকা পণ নিয়েছিলেন হারিন্দ্র। কিন্তু, সম্প্রতি পণের পুরো টাকাটাই ছোট ছেলের হবু শ্বশুরবাড়ির লোকেদের ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। পণ নিয়েই তো ছেলের বিয়ে দেবেন বলে ঠিক করেছিলেন। তাহলে এখন কেন পণের টাকা ফেরত দিলেন? অবসরপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের আবেদনে সাড়া দিয়েই এই কাজ করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত ৪ অক্টোবর ভোজপুর জেলার সদর শহর আরাতে এক জনসভায় পণপ্রথা ও বাল্যবিবাহ রোধ করতে সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। হারিন্দ্র সিংয়ের বড় ছেলে রাজীব রঞ্জন সিং জানিয়েছেন, গত ফ্রেরুয়ারি মাসেই তাঁর ভাইয়ের বিয়ের পাকা কথা হয়ে গিয়েছিল। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পণের চার লক্ষ টাকাও মিটিয়ে দেন মেয়ের বাড়ির লোকেরা। তিনি বলেন, ‘ ৪ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ১০ অক্টোবর সেই টাকা আমরা ফিরিয়ে দিয়েছি।’
[পণের টাকা জোগাড় করতে কিডনি বিক্রির চেষ্টা তরুণীর]
ছেলের বাড়ির লোকেদের এ হেন আচরণে প্রথমে কিছুটা ঘাবড়েই গিয়েছিলেন মেয়ের বাড়ির লোকেরা। পাত্রীর বড় ভাই রোহিত সিং বলেন, ‘ প্রথমে কি করব বুঝতে পারছিলাম না। আমি ভেবেছিলাম ওনারা হয়ত বিয়ে ভেঙে দিতে চাইছেন। তাই পণের টাকা ফেরত দিচ্ছেন। আমি গর্বিত, এমন মূল্যবোধ সম্পন্ন পরিবারে আমার বোনের বিয়ে হচ্ছে।’ অবসরপ্রাপ্ত ওই প্রধান শিক্ষকের সিদ্ধান্তে খুশি ভোজপুর জেলার পুলিশ সুপার আকাশ কুমার। তিনি বলেন, পাত্রীর বাড়ি লোকেরা কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। তাই হারিন্দ্র সিং বা তাঁর পরিবারের লোকেদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে পণ নিয়ে যে সামাজিক সচেতনতা বাড়ছে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ। প্রসঙ্গত, ভারতে পণ দেওয়া ও পণ নেওয়া দুটো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অপরাধীদের সাত বছর পর্যন্ত হাজতবাস হতে পারে।
[দিওয়ালিতেও ভারতের এই গ্রামে ফাটে না শব্দবাজি, জানেন কেন?]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.