সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রামেশ্বরমে প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের মূর্তির সামনে গীতা রাখা নিয়ে তৈরি হয়েছিল তুমুল বিতর্ক। এবার সেই বিতর্কে ইতি টানতে গীতার পাশে রাখা হল খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল ও মুসলিম ধর্মগ্রন্থ কোরানও।
গত ২৭ জুলাই কালামের মৃত্যুবার্ষিকীতে তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে তাঁর গ্রাম পেইকারাম্বুতে একটি স্মারক ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তামিলনাড়ু সরকারের দেওয়া জমিতে ১৫ কোটি টাকা খরচ করে ওই ভবনটি তৈরি করে প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ও অন্যান্য সরকারি দপ্তর। সেদিন বীণাবাদনরত কালামের একটি মূর্তিরও উদ্বোধন করেছিলেন মোদি। সেই মূর্তির সামনেই কর্তৃপক্ষের তরফে গীতা রাখা হয়েছিল। আর তারপরই সমালোচনার মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। প্রশ্ন ওঠে, প্রয়াত রাষ্ট্রপতির মূর্তির সামনে কেন শুধু হিন্দু ধর্মগ্রন্থ রাখা হবে? এমডিএমকে নেতা বাইকো অভিযোগ তুলেছিলেন, কালামের মূর্তিকেও ধর্মের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। যা কোনওভাবেই কাম্য নয়। এর সাফাই দিতে গিয়ে এক সরকারি আধিকারিক বলেন, বীণা কালামের অত্যন্ত প্রিয় বাদ্যযন্ত্র ছিল। আর মাঝেমধ্যেই তিনি তাঁর কথায় গীতার উল্লেখ করতেন। তিনি এমন দাবি করলেও কর্তৃপক্ষ অবশ্য এর সত্যতা স্বীকার করেনি। আর এই বিতর্ক রুখতে আসরে নামেন কালামের আত্মীয় শেখ সেলিম। তাঁর মূর্তির সামনে রাখা গীতার পাশে একটি বাইবেল ও কোরানও রেখে দেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জাতি-ধর্মের অনেক উর্ধ্বে। তাই কোনও একটি ধর্মগ্রন্থ তাঁর মূর্তির সামনে শোভা পায় না।
প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থায় বহুদিন কাজ করেছেন ‘মিসাইল ম্যান’ কালাম। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বাড়িটি রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্রের মডেল দিয়ে সাজানো হয়েছিল। কালামের প্রায় দু’শোটি আলোকচিত্র ও ন’শোটি আঁকা ছবি রয়েছে বাড়িতে। ওই বাড়িতেই প্রয়াত রাষ্ট্রপতির সাত ফুট উঁচু একটি ব্রোঞ্জের মূর্তিও স্থাপন করা হয়েছে। তবে বাইবেল ও কোরান রেখেও বিতর্কের যে ইতি ঘটছে না, তেমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের। মনে করা হচ্ছে, কালামের মূর্তির রং গেরুয়া ধাঁচের হওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলতে পারে বিরোধীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.