ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। ঠিক সেসময়ে মহারাষ্ট্রের কানপুরে জাজমাউয়ের সিদ্ধান্ত ঘাটের শিব মন্দিরে ঠিক উলটো চিত্র। ২২ জুলাই শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার শিবলিঙ্গে জল ঢালতে আসা ভক্তদের ফল, দুধ, ফলের রস ও জল খাওয়ালেন মুসলিম বাসিন্দাদের একাংশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই অনন্য নজির দেখে প্রশংসায় মেতে উঠেছেন ওই এলাকার সব মানুষ।
লিঙ্গপুরাণ মতে, শ্রাবণ মাস হল শিবের সব থেকে প্রিয়। আর এই মাসের সোমবারগুলিতে যাঁরা উপবাস করে ভক্তিভরে তাঁর আরাধনা করেন। দুধ বা গঙ্গাজল ও বেলপাতা দিয়ে তাঁর লিঙ্গমূর্তির পুজো করেন। তাঁদের প্রতি মহাদেব প্রতি প্রসন্ন হন বলেই বিশ্বাস। তাই প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন শিব মন্দিরের মতো কানপুরের সিদ্ধান্ত ঘাটের মন্দিরেও নামে মানুষের ঢল। তবে এবছর পুরো অন্যরকম অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকলেন ওই মন্দিরে যাওয়া শিবভক্তরা। গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত শহরের অন্যতম বিখ্যাত এই মন্দিরে তাঁরা দেখতে পেলেন, রকমারি ফল, দুধ, ফলের রস আর জল নিয়ে অপেক্ষা করছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ। আর শিবলিঙ্গে জল ঢেলে মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে বেরিয়ে আসার পর ভক্তদের হাতে সেগুলি তুলে দিচ্ছেন।
এমনিতে কানপুর শহরে গঙ্গা-যামুনি তেহজিবের হয়ে কাজ করে কানপুর সামাই সমিতি। কিন্তু, এবছর সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা যখন বাড়ছে ঠিক তখনই সিদ্ধান্ত ঘাটের শিব মন্দিরে ওই কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা নেয় তারা। এপ্রসঙ্গে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সভাপতি আনোয়ার হুসেন বলেন, “ভারতবর্ষ বিভিন্ন ধর্মের আতুঁড়ঘর। আর প্রতিটি ধর্মের মানুষই খুব আবেগপ্রবণ। মানুষ ও ভগবানের তৈরি সমস্ত কিছুর প্রতি ভালবাসা আছে তাদের। যেভাবে আমরা নিজেদের ধর্মকে সম্মান করি অন্যদের ধর্মকেও সেই চোখে দেখি। কারণ আমরা সবাই মনে করি যে সবধর্মই সমান।”
শিব মন্দিরে আসা এক ভক্ত বলেন, “এটা হিন্দুদের একটি পবিত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান। সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের এই পদক্ষেপ আমাদের মন ছুঁয়ে গিয়েছে। যেভাবে তাঁরা ফল ও দুধ ভক্তদের খাওয়াচ্ছেন তা দেখে আমরা অভিভূত।” শৈলেন্দ্র দ্বিবেদী নামে এক ভক্ত বলেন, “অনেক ভক্ত বহুদূর থেকে এই মন্দিরে এসেছিলেন। এই ঘটনায় তাঁদের যেমন পেট ভরেছে তেমনি ভরেছে মনও। দেশের সর্বত্র সম্প্রীতির এই ধরনের উদাহরণ আরও বেশি করে তুলে ধরতে হবে। তবেই সমাজ থেকে দূর হবে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.