নন্দিতা রায়, ভোপাল: মধ্যপ্রদেশের ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে ততই পারদ চড়ছে সাট্টা বাজারেও। রাজনৈতিক নেতারা যদিও সাট্টা বাজারের অস্তিত্বকে খানিকটা অস্বীকারই করেন এবং পাত্তাও দিতে চান না৷ কিন্তু সাট্টার বাজার প্রায় দেশের উল্লেখযোগ্য রাজ্য নির্বাচন থেকে শুরু করে লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত সবেতেই সরগরম হয়ে ওঠে। ভোটের ফলাফল কী হতে পারে তা আন্দাজ করে চলতে থাকে কোটি কোটি টাকার বাজি। পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাট্টা বাজারের গতিবিধি আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে, তাতে গতি এনে দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনই।
[নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদ, অসমে বিজেপি ছাড়লেন একগুচ্ছ নেতা]
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপির ‘পোস্টার বয়’ শিবরাজ সিং চতুর্থবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন কি না তার উপরেই সবথেকে বেশি টাকার বাজি পড়ছে সাট্টা বাজারে। সাট্টা বাজারে এক টাকার উপরে দর যত কম হয় সেই সম্ভাবনাই সবথেকে বেশি বলে ধরে নেওয়া হয়। গত সপ্তাহ পর্যন্ত যেখানে শিবরাজই যে আবার মধ্যপ্রদেশে মসনদে বসতে চলেছেন তাতে খুব একটা বাজি ধরা হয়নি। কিন্তু আজকের দিনে সেই দর এক টাকার উপরে এক টাকা, অর্থাৎ দ্বিগুণ। সাট্টা বাজারের ব্যাখ্যায়, শিবরাজের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা পঞ্চাশ শতাংশ। রাজ্যের দুই কংগ্রেস নেতা কমলনাথ ও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া মুখ্যমন্ত্রী হবেন কি না বাজি চলছে তা নিয়েও। সেখানে অবশ্য জ্যোতিরাদিত্যই এগিয়ে রয়েছেন।
শুধু মুখ্যমন্ত্রী পদই নয়, কোন দল কত আসন পাবে তার উপরেও সাট্টার লেনদেন চলছে। সাট্টা বাজারের হিসেবে বর্তমানে কংগ্রেস এরাজ্যে এগিয়ে রয়েছে। এরাজ্যে কংগ্রেস ১১০ থেকে ১১৫ টি আসন পাবে এই বাজির উপরে দর চলছে এক টাকার মূল্যে এক টাকা, আর বিজেপির ক্ষেত্রে এই একই দর ১০০ থেকে ১০২ আসনের উপরে। রাজ্যের ২৩০ টি বিধানসভা আসনের ‘ম্যাজিক ফিগার’ ১১৬। কংগ্রেস তার কাছাকাছি এই সম্ভাবনার উপরেই সবথেকে বেশি টাকা বাজি চলছে। আবার কংগ্রেস ১২০ থেকে ১২৫ টি আসন পাবে তার উপরে দর চলছে এক টাকার উপর তিন টাকা। বিজেপির ক্ষেত্রে এই একই টাকার দর ১১৫ থেকে ১২০ আসন পাওয়ার উপরে। দর বেশির অর্থ এই সম্ভাবনা খুবই কম। এককথায় সাট্টা বাজারে এখনও পর্যন্ত দুই দলের কাউকেই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার ইঙ্গিত দিচ্ছে না। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে সেই বার্তায় তুলে ধরছে।
[আন্দামানে পর্যটক খুনে নয়া মোড়, যিশুর মাহাত্ম্য প্রচারে গিয়ে মৃত্যু মার্কিন যুবকের]
দিনকয়েক আগে পর্যন্ত অবশ্য বিজেপিই সাট্টা বাজারে এগিয়ে ছিল। সাট্টা বাজারের হিসেব প্রতিদিনই বদলাতে থাকে। তাই দর ভাল বলেই নির্বাচনে সেই ফল হতে চলেছে এমনটা মানেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সাট্টা বাজারে নিয়মিত যারা টাকা লাগান সেই বুকিদের মতে সাট্টা বাজারের দর ওঠানামা করার ক্ষেত্রে তাঁদের নিজস্ব প্রযুক্তি কাজ করে। রীতিমত সমীক্ষা উপর ভিত্তি করেই চলতে থাকে দরদস্তুর। শুধু মধ্যপ্রদেশই নয়, দেশের সাট্টা বাজারগুলিতে বাকি দুই রাজ্য ছত্তিশগড় ও রাজস্থান নিয়েও দরাদরি চলছে। রাজস্থানে বসুন্ধুরা রাজে আবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন সেই বাজিতে সবথেকে বেশি দর চলছে। একটাকার উপরে চার টাকা। অর্থাৎ সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। কংগ্রেস রাজস্থানে ক্ষমতায় আসবে তাতে দর খুবই কম। একটাকার উপরে কুড়ি পয়সা। সাট্টা বাজারের হিসেবে প্রায় একশো শতাংশ সম্ভাবনা। ছত্তিশগড়ে রমন সিং আবার মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন তাতে দর কমই রয়েছে। দেশের মুম্বই, জয়পুরের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য নির্বাচনগুলির উপরে কলকাতার সাট্টা বাজারেও বহু টাকার বাজি ধরা হচ্ছে বলে শোনা গিয়েছে। এর আগে গতবছর গুজরাত নির্বাচনের সময়েও সাট্টা বাজার খুবই সরগরম হয়ে উঠেছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.