সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুধু বাংলাই নয়, বুলবুলের ডানার ঝাপটায় লন্ডভন্ড ওড়িশাও। প্রবল বৃষ্টি, আর সঙ্গে প্রচণ্ড ঝোড়ো হাওয়া। এই দুইয়ের কাঁধে ভর করেই শনিবার দিনভর ওড়িশায় তাণ্ডব চালাল ঘূর্ণিঝড় বুলবুল।
বিশেষ করে রাজ্যের উপকূলীয় অংশে বেশি আঘাত হানল সে। ঝড়ের জেরে অগুনতি গাছ উপড়ে পড়েছে জগৎ সিংহপুর, কেন্দ্রাপাড়া এবং ভদ্রক জেলায়। উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটিও। ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছে প্রচুর ঘরবাড়ি। গাছের ডাল ভেঙে পড়ে রীতিমতো বেহাল দশা রাস্তাঘাটের। অধিকাংশ স্থানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, ব্যাহত বিদ্যুৎ পরিষেবাও। তবে এখনও পর্যন্ত এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কারও মৃত্যুর খবর মেলেনি। ওড়িশার মুখ্য সচিব অসিত ত্রিপাঠীর দাবি, ঝড়-বৃষ্টিতে পোতাশ্রয়গুলিতে থাকা বেশ কিছু নৌকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবার অনেক জায়গা থেকেই রাস্তাঘাটের বেহাল দশারও খবর মিলেছে। সচিবের আশ্বাস, দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি হবে সেখানে। তবে এখনই বিদ্যুৎ পরিষেবা পুনরায় চালু করা সম্ভব হবে না। অন্তত দু’দিন সময় লাগবেই পরিষেবা ফিরতে।
অন্যদিকে, বুলবুলের আছড়ে পড়ার আগেই বিপর্যয় মোকাবিলায় আগাম সতর্কতা গ্রহণ করেছিল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং ওড়িশার ডিজাস্টার ব়্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স। শনিবার ঝড়ের প্রভাবে গাছ ভেঙে পড়া এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে রাজ্যের অধিকাংশ স্থানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার খবর আসতেই দ্রুত সক্রিয় হয় দুই সংশ্লিষ্ট দুই বাহিনীর রক্ষীরা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ বুলবুলের নিশানায় থাকলেও তাঁরাও যে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রত্যেক মুহূর্তের গতিবিধির দিকে নজর রেখেছেন, সেকথা জানিয়েছেন ভুবনেশ্বর হাওয়া অফিসের অধিকর্তা এইচ আর বিশ্বাস।
শনিবার তিনি বলেন, ‘‘গোপালপুর, পারাদ্বীপের ডপলার ওয়েদার ব়্যাডার বুলবুলের গতিবিধির উপর নজর রাখছে। সেই সঙ্গে সক্রিয় রয়েছে আরও কিছু নজরদারি সংস্থাও।’’ ইতিমধ্যেই বুলবুলের প্রভাবে রাজ্যের উপকূলীয় এলাকাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঝড়ের বেগ প্রথমে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার হলেও পরে বেড়ে দাঁড়ায় ঘণ্টাপিছু ৯০ কিলোমিটার। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে কেন্দ্রাপাড়ায়। শুক্রবার থেকে এখনও পর্যন্ত সেখানে বৃষ্টির পরিমাণ ১৮০ মিলিমিটার। ভদ্রকের চাঁদবালিতে বৃষ্টি হয়েছে ১৫০ মিলিমিটার আর জগৎসিংহপুরের তিরতোলে বৃষ্টির পরিমাণ ১০০ মিলিমিটার। এই সব এলাকার নিচু জায়গা থেকে অন্তত ৩,০০০ মানুষকে নিরাপদে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রাপাড়া থেকে অন্যত্র সরানো হয়েছে অন্তত ১,৫০০ জনকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.