সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেঙ্গালুরুর ইঞ্জিনিয়ার অতুল সুভাষের আত্মহত্যা মামলায় জামিন পেলেন স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া, শাশুড়ি নিশা সিংহানিয়া ও শ্যালক অনুরাগ সিংহানিয়া। শনিবার শুনানির পর বেঙ্গালুরু আদালত তিন অভিযুক্তের জামিনের নির্দেশ দেয়। গত ৯ ডিসেম্বর আত্মঘাতী হন অতুল সুভাষ। সুইসাইড নোট ও একটি ভিডিয়োতে চরম সিদ্ধান্তের জন্য প্রাক্তন স্ত্রী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দায়ি করেন অতুল।
বেঙ্গালুরুতে কর্মরত অতুল সুভাষের ২৪ পাতার সুইসাইড নোট পড়ে এবং মৃত্যুর আগের ভিডিও দেখে শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ। যুবকের মৃত্যুর জন্য পরক্ষে দায়ী করা হয় স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়াকে। এইসঙ্গে অভিযুক্ত হন শাশুড়ি নিশা সিংহানিয়া ও শ্যালক অনুরাগ সিংহানিয়া। যদিও অতুলের মৃত্যুর পর গা ঢেকে দিয়েছিলেন নিকিতা। অন্যদিকে অতুলের পরিবারের তরফে নিকিতার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। অভিযোগপত্রে নাম ছিল নিকিতার মা ও ভাইয়েরও। তদন্তে নেমে তার ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় তিন জনকে।
এরপর বেঙ্গালুরু দায়রা আদালতে জামিনের আবেদন করেন নিকিতা ও তাঁর পরিবার। শনিবার সংক্ষিপ্ত শুনানির পর জামিন পেলেন তাঁরা। ২১ দিন জেলবন্দি থাকার মুক্ত হলেন অতুলের স্ত্রী, শাশুড়ি ও শ্যালক। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, চার বছরের ছেলের দেখাশোনার যুক্তি দেন নিকিতার আইনজীবী। তার ভিত্তিতেই জামিন পেয়েছেন তিনি এবং বাকিরা।
বেঙ্গালুরুর একটি আবাসন থেকে প্রযুক্তি কর্মী অতুলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সঙ্গে উদ্ধার হয় ২৪ পাতার একটি সুইসাইড নোট। যেখানে স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া, শাশুড়ি নিশা সিংহানিয়া, শ্যালক অনুরাগ-সহ স্ত্রীর পরিবারের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেন যুবক। প্রতিটি পাতায় লেখা, ‘বিচার এখনও বাকি!’ মৃত্যুর আগে ৮০ মিনিটের একটি ভিডিও রেকর্ড করেন অতুল। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘বিচার না মেলা পর্যন্ত তোমরা যেন আমার অস্থি বিসর্জন কোরো না!’
দাবি, স্ত্রী এবং শ্বশুরবাড়ির অন্যরা অতুলের বিরুদ্ধে একাধিক ‘মিথ্যে’ অভিযোগ করেছিলেন। এরপর পারিবারিক আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলার রায় যুবকের বিপক্ষেই গিয়েছিল। মনে করা হচ্ছে, সেই চাপের মুখেই আত্মহননের পথ বেছে নেন যুবক। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর গোটা দেশে বিতর্ক শুরু হয়েছে ৪৯৮এ ধারার অপব্যবহার এবং খোরপোশের অধিকার নিয়ে। জানা গিয়েছে, যদিও অতুলের স্ত্রী বড় চাকরি করেন, তবুও মামলার জেরে প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকা খোরপোশ দিতে হত। অতুলের দাবি ছিল, নিকিতা মাসে ২ লক্ষ টাকা খোরপোশ চেয়েছিলেন তাঁর ও তাঁদের চার বছরের পুত্রের জন্য। ২০২০ সাল থেকেই এই নিয়ে তিনি ও তাঁর মা-ভাই লাগাতার চাপ দিয়ে আসছিলেন বলেই সুইসাইড নোটে অভিযোগ করেছিলেন অতুল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.