সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাকরি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছিলেন। ব্যবসা শুরু করেও লাভ হয়নি। একের পর এক দেনা করে গিয়েছেন। বাড়িতে হানা দিচ্ছিল পাওনাদাররা। নিঃস্ব অবস্থায় মনে হয়েছিল, একরত্তি শিশুকন্যার মুখে খাবারটুকুও তুলে দেওয়ার সামর্থ্য নেই তাঁর। সেই হতাশা থেকেই দু’বছরের কন্যা সন্তানকে হত্যা করলেন বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) এক ব্যক্তি। খুনের পরে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেননি। পরে পুলিশের কাছে ধরা পড়ে নিজের অপরাধ কবুল করেন তিনি।
জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম রাহুল পারমার। ৪৫ বছর বয়সি রাহুল বেশ কিছুদিন আগে চাকরি হারিয়েছেন। তারপরে বিটকয়েনের ব্যবসা শুরু করেন। সেই জন্য বিপুল অঙ্কের দেনা করতে হয় তাঁকে। কিন্তু ব্যবসায় লাভ হয়নি বলে দেনা শোধ করতে পারেননি। বাড়িতে এসে লাগাতার হেনস্তা করতেন পাওনাদাররা। মিথ্যা বলে স্ত্রীর গয়না বিক্রি করেও খানিকটা দেনা শোধ করেছিলেন। তাতেও সুরাহা হয়নি। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায়, মেয়েকে খাওয়ানোর সামর্থ্যও ছিল না রাহুলের। ফলে সিদ্ধান্ত নেন, মেয়েকে খুন করে নিজেকেও শেষ করে ফেলবেন।
পুলিশকে রাহুল জানিয়েছেন, মেয়েকে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন তিনি। গোটা পথ মেয়ের সঙ্গে শেষবারের মতো খেলা করেছিলেন রাহুল, পছন্দের কেক কিনে দিয়েছিলেন। তারপর একটি লেকের ধারে এসে দাঁড়ান। অনেকবার ভেবেছিলেন, বাড়ি ফিরে যাবেন। কিন্তু অর্থাভাব তাঁকে আটকে দেয়। রাহুল বলেছেন, “আমার বুকের মধ্যে জোরে চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে মেয়েকে খুন করেছি। তারপরে নিথর মেয়ের দেহ কোলে নিয়েই লেকের জলে ঝাঁপ দিয়েছি। কিন্তু আমি চেষ্টা করেও মরতে পারিনি।”
লেকের মধ্যেই মেয়ের দেহ ফেলে রেখে বেপাত্তা হয়ে যান রাহুল। স্বামী ও কন্যাকে খুঁজে না পেয়ে পুলিশে খবর দেন রাহুলের স্ত্রী। তদন্ত করতে গিয়ে লেকের জলে শিশুকন্যার দেহ পায় পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করেছিল রাহুলেরও মৃত্যু হয়েছে। পরে অবশ্য তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়। জানা গিয়েছে, এর আগে মিথ্যা বলে স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে দেনা শোধ করেছিলেন। তারপরে পুলিশের কাছে মিথ্যা ডাকাতির অভিযোগও করেছিলেন। সবমিলিয়ে হেনস্তার হাত থেকে বাঁচতেই আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন রাহুল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.