ছবি: প্রতীকী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্ষিতই হননি হাথরাসের নিহত দলিত তরুণী! ফরেন্সিক রিপোর্ট খাড়া করে এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন এক পুলিশ অফিসার। যা ঘিরে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে তাঁর যুক্তি, ”ফরেন্সিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, নির্যাতিতার শরীরে কোথাও কোনও বীর্য পাওয়া যায়নি, তাই তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠছিল, তা সম্পূর্ণ ভুল।” পুলিশ আধিকারিকের এই মন্তব্যের পালটায় বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, তদন্তের স্বার্থে অনেকক্ষণ ধরে তাঁর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল, ফলে বীর্যের অস্তিত্ব না পাওয়াই স্বাভাবিক। তার মানে ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি বলে দাবি সঠিক নয়। ফলে যোগীরাজ্যের পুলিশ আধিকারিকের এ হেন মন্তব্য ক্ষোভের আগুনে আরেকপ্রস্ত ঘি ঢালল, তা বলাই বাহুল্য।
উত্তরপ্রদেশের সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক প্রশান্ত কুমারের দাবি, গলায় ফাঁস লেগে আঘাতের জেরে মৃত্যু হয়েছে ওই দলিত তরুণীর। কিন্তু ধর্ষণের প্রমাণ ফরেন্সিক রিপোর্টে মেলেনি। তবে তাঁর শরীরে বহু আঘাতের চিহ্ন আছে। ভেঙে গিয়েছে শিরদাঁড়া। এমনিই ঘটনা নিয়ে ফের তুমুল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে দেশজুড়ে। তার মধ্যে পুলিশের এই বয়ানে যোগী প্রশাসনের ব্যর্থতা যেন আরও প্রকাশ্যে চলে এল।
অন্যদিকে, এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া একটি ভিডিও থেকে জানা যাচ্ছে যে নির্যাতিতার বাবাকে বয়ান বদলের জন্য চাপ দিচ্ছেন হাথরাসের জেলাশাসক। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘মিডিয়া ক’দিন থাকবে? ওরা চলে যাবে। কিন্তু আমরা থাকব। এবার আপনি ভেবে দেখুন বিবৃতি বদলাবেন কিনা।’’ সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া সেই ভিডিও ফুটেজ ঘিরে তৈরি হয়েছে আরেক বিতর্ক।
বৃহস্পতিবার সকালেই কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী একটি ভিডিও টুইট করেন। ভিডিওতে নির্যাতিতার বাবাকে কথা বলতে দেখা যায়। সেই টুইটে প্রিয়াঙ্কা দাবি করেন, নির্যাতিতার বাবাকে দিয়ে জোর করে মুচলেকা লিখিয়ে নিয়েছে যোগী সরকার। তিনি তদন্তের গতিপ্রকৃতিতে সন্তুষ্ট নন। প্রিয়াঙ্কা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘সরকার কি ধমক দিয়ে চুপ করাতে চাইছে ওঁকে? ’’
हाथरस की बेटी के पिता का बयान सुनिए।
उन्हें जबरदस्ती ले जाया गया। सीएम से वीसी के नाम पर बस दबाव डाला गया। वो जांच की कार्रवाई से संतुष्ट नहीं हैं।
अभी पूरे परिवार को नजरबंद रखा है। बात करने पर मना है।
क्या धमकाकर उन्हें चुप कराना चाहती है सरकार?
अन्याय पर अन्याय हो रहा है। pic.twitter.com/6lIW1hdvDc
— Priyanka Gandhi Vadra (@priyankagandhi) October 1, 2020
প্রসঙ্গত, নির্যাতিতার বাবা লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, এই ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকায় তিনি সন্তুষ্ট। এখন প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এই বিবৃতি তিনি স্বেচ্ছায় দেননি? প্রশাসনিক স্তরে চাপের কাছেই নতিস্বীকার করে এমন বিবৃতি দিতে হল তাঁকে? প্রশ্নটা নতুন করে উস্কে দিচ্ছে ওই কথোপকথনের ভিডিও। বৃহস্পতিবার সিট-এর সদস্যরা তদন্তের স্বার্থে নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়েছিলেন। এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট প্রশাসনকে জমা দেওয়া হবে বলে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর হাথরাসের তরুণী নির্যাতনের শিকার হন। তাঁকে প্রথমে আলিগড়ের এক হাসপাতালে ভরতি করা হলেও পরে নিয়ে আসা হয় দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে। মঙ্গলবার সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। তরুণীর মৃত্যুর পরে অপরাধীদের দ্রুত ও কঠোরতম শাস্তির প্রতিবাদে মুখর গোটা দেশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.