ছবি: প্রতীকী
ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ফের ভারতসেরা বাংলা। এবং তা কোভিডযুদ্ধের ময়দানে। গণটিকাকরণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যকেই দেশের এক নম্বরে স্থানে বসাল জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন (ন্যাশনাল হেলথ মিশন), সংক্ষেপে এনএইচএম।
গত ১৭ জানুয়ারি গোটা দেশে করোনার টিকাকরণ (Corona Vaccine) শুরু হয়েছে। ঠিক তখনই সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে টিকাদানের হার যাচাই করতে সমীক্ষা শুরু করে এনএইচএম। কয়েক দিন আগে মিশনের অধিকর্তা তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব বন্দনা গুরনানি স্বাস্থ্য দপ্তরে চিঠি দিয়ে জানান, দেশের মধ্যে গণটিকাকরণে পশ্চিমবঙ্গই শীর্ষে। শুধু তা-ই নয়, টিকা নেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় নজরদারির ক্ষেত্রেও বড় রাজ্যগুলির মধ্যে বাংলা পয়লা নম্বরে। এই সাফল্যের জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরেকে অভিনন্দন জানান তিনি।
জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের পাঠানো তথ্যে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে টিকার হার ৮৯%। এর পরেই রয়েছে চণ্ডীগড়। তৃতীয় স্থানে তামিলনাড়ু। এই দু’টি রাজ্যের মধ্যে পার্থক্য খুব কম। গত অর্থবর্ষের তুলনায় এবার বাংলায় করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার চাহিদাও যে অনেকটা বেড়েছে, তারও উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি, করোনা টিকা নেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য দপ্তরের পদক্ষেপের তারিফ করে মিশনের বক্তব্য, টিকাদানের পর যেভাবে টানা নজরদারি করা হয়, তা যথেষ্ট সন্তোষজনক।
এ তো গেল রাজ্যের অবস্থা। কেন্দ্রের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে একদম পিছনের সারিতে গুজরাট। ন’টি বড় রাজ্যে টিকাদান ও নজরদারির যে পারফরম্যান্স গ্রাফ কেন্দ্রের তরফে প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে সব চেয়ে কম নম্বর পেয়েছে গুজরাট। কর্নাটক, বিহার ও মহারাষ্ট্রের পারফরম্যান্সও সন্তোষজনক। এই রাজ্যগুলিকে ‘এক্সেলেন্ট’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ রাজস্থান এবং গুজরাটের মতো রাজ্যে টিকাকরণে ধারাবাহিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। এনএইচএমের স্কেল অনুযায়ী গুজরাট এবং রাজস্থানের অবস্থান ‘পুওর’। করোনার সংক্রমণ রুখতে এই রাজ্যগুলির আরও সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে বলে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা এই স্বীকৃতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানান, “গণটিকাকরণের মাধ্যমে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ রুখতে নানাবিধ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য, প্রাপ্তবয়স্ক সব নাগরিককে করোনা টিকার আওতায় আনা। সেই কর্মসূচি নিয়েই কাজ চলছে।” তাঁর মতে, স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্মিলিত উদ্যোগে এই সাফল্য। একই অভিমত, স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীরও। খুশি সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলি। এসএসকেএম হাসপাতালের জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মৌসুমী বোস বলেন, “ছুটির দিনেও আমরা কাজ করছি। এই পারফরম্যান্স আমরা যে কোনও মূলে্য ধরে রাখার চেষ্টা করব।” রাজ্যে কোভিড টিকাকরণ প্রকল্প সফল করতে শুরু থেকেই লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে। করোনা বধে ভ্যাকসিন একমাত্র অস্ত্র- সর্বস্তরে প্রচার চালানো হচ্ছে। প্রচারে শামিল সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসকরাও। সব মিলিয়ে এই সাফল্য এসেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.