সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: ১০০ দিনের টাকা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চলছেই। কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বঞ্চনার অভিযোগে সরব রাজ্য। পালটা কেন্দ্রেরও দাবি, পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত কোনও টাকা মিলবে না। এনিয়ে চাপানউতোরের মাঝেই বকেয়া আদায়ে দিল্লি (Delhi) গেলেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। দিল্লির কৃষিভবনে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের (Giriraj Singh) সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক সদর্থক হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
মনরেগা প্রকল্পের (MGNREGA) কাজে দেশের মধ্যে প্রথম স্থান বাংলার। এখানে একটি কর্মদিবসও নষ্ট হয়নি। পঞ্চায়েতের সমস্ত স্তরে ১০০ দিনের কাজে এলাকার উন্নয়ন হয়েছে ভালই। প্রত্যেক কর্মপ্রার্থীই কাজ পেয়েছেন। সবমিলিয়ে এই কাজে রাজ্যের সাফল্য নজরকাড়া। কেন্দ্রের তরফেই সেই স্বীকৃতি মিলেছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের অভিযোগ, তারপরও বকেয়া টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। এমনকী আর্থিক জোগানে টান পড়ায় ঠিকমতো এই কাজ দেওয়া যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ। বাধ্য হয়েই ১০০ দিনের কাজ করা কর্মীকে অন্যান্য কাজ দিতে হচ্ছে। রাজ্য মন্ত্রিসভায় এ নিয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এবার সেই বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য দিল্লি গিয়ে সরাসরি কেন্দ্রের দ্বারস্থ হলেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী (Panchayet Minister)। কৃষিভবনে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের সঙ্গে সারলেন দীর্ঘ বৈঠক। বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ”আমরা গত বছর ৩০ কোটি কর্মসংস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলাম। এখন প্রথাগত কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতির কথা বলে কেন্দ্র টাকা দিতে চাইছে না। আমাদের প্রাপ্য প্রায় ৬৭৪০ কোটি টাকা। গ্রামীণ আবাস যোজনা ও গ্রাম সড়ক যোজনায় কাজের টাকা আটকেছে কেন্দ্র। এসব নিয়ে আমরা বারংবার আবেদন করেছিলাম কেন্দ্রের কাছে। মুখ্যমন্ত্রীও আগে এখানে এসে প্রধানমন্ত্রীকে হিসেব দিয়েছিলেন। আমরা চাই, সমস্ত জটিলতা কাটিয়ে সেই টাকা দ্রুত দেওয়া হোক।”
বৈঠক থেকে কী ইঙ্গিত পেলেন? এর উত্তরে পঞ্চায়েত মন্ত্রী জানান, বৈঠক সদর্থক হয়েছে। জট কাটবে বলে আশাবাদী তিনি। কেন্দ্রের তরফে যদিও এ নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত, বছর পেরলেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট (WB Panchayet Election)। তার আগে গ্রামোন্নয়নের কাজে বাড়তি জোর দেওয়া হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু প্রকল্পের টাকা ঠিকমতো না মিললে সেই কাজ ব্যাহত হবে। আর নির্বাচনে তার প্রভাব পড়াও অনিবার্য। তবে একই দিনে এই বিষয়টি কার্যত ভেস্তে দিতে তৎপর হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যের গ্রামীণ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সংক্রান্ত ভুয়ো তথ্য দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এই দাবী করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে চার পাতার চিঠি লিখে সিবিআই তদন্ত চাইলেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.