নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: স্বাধীনতা দিবসে রাজধানী দিল্লির লালকেল্লায় সরকারি অনুষ্ঠান মাতিয়ে দিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসীদের তৈরি হাতপাখা। ১৫ আগস্ট লালকেল্লা চত্বরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাংসদ, রাজনীতিক থেকে কূটনীতিক-এককথায় দেশের এলিট ক্লাসের মানুষজনের হাতে হাতে রাজ্যের আদিবাসীদের মধ্যে মাহালি সম্প্রদায়ের শিল্পীদের তৈরি পাখা দেখতে পাওয়া যাবে।
লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান পরিচালনা করে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় আদিবাসী মন্ত্রককে এক হাজার বাঁশের তৈরি হাতপাখা কেনার জন্য বরাত দেওয়া হয়েছে। আদিবাসী মন্ত্রকের অধীনে থাকা ‘ট্রাইবাল কো-অপারেটিভ মার্কেটিং ডেভলপমেন্ট ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড’, সংক্ষেপে ‘ট্রাইফেড’ এই হাতপাখাগুলি সরবরাহ করবে বলেই জানা গিয়েছে। ট্রাইফেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রবীর কৃষ্ণ এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “পশ্চিমবঙ্গের মাহালি উপজাতির মানুষেরা তৈরি করছেন। যে হাতপাখাগুলি তৈরি করা হচ্ছে তা বাঁশের উপর তৈরি হলেও বেশ উঁচুমানের। হাতপাখাগুলির দুদিকে হাতে আঁকা বিভিন্ন ধরনের আদিবাসী চিত্র রয়েছে।’’
[সংরক্ষণের বিরোধিতায় সংবিধানকে পুড়িয়ে পুলিশের জালে ব্যক্তি]
প্রসঙ্গত, সদ্য দিন কয়েক আগেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সাড়ম্বরে আদিবাসী দিবস পালিত হয়েছে। তারপরেই রাজধানীর আঙিনায় বিশেষ করে লালকেল্লায় রাজ্যের মাহালি শিল্পীদের হাতের কাজের নমুনা প্রদর্শন অত্যন্ত গর্বের ব্যাপার বলেই সকলে মনে করছেন। রাজ্যের ঝাড়গ্রাম জেলা-সহ জঙ্গলমহলের অন্যান্য জায়গাতেও এই মাহালিরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। মূলত বাঁশের কঞ্চি থেকে হাতপাখা, ঝুড়ি, চুবড়ি ইত্যাদি তৈরি করেই তারা জীবিকা নির্বাহ করেন।
[ছেলেদের তুলনায় বাড়ছে নাবালিকা মেয়েদের পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা]
এই প্রথমবার লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে হাতপাখা ব্যবহার হতে চলেছে। এই পরিকল্পনাটি আদিবাসী মন্ত্রকেরই। যা চলতি বছরের মে মাসে দিল্লির একটি প্রদর্শনী থেকেই তারা গ্রহণ করেছে বলেই জানা গিয়েছে। পরবর্তীকালে তাঁরাই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে এ ব্যাপারে আবেদন করেছিলেন বলেও কৃষ্ণ জানান। তিনি বলেছেন, “আদিবাসীদের তৈরি জিনিসপত্র মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্যই মূলত আমাদের এই উদ্যোগ। একইসঙ্গে গরমের মধ্যে অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা যাতে আরাম পান সেটাও মাথায় ছিল। আমাদের আইডিয়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পছন্দ হয় এবং তারা এক হাজার হাতপাখার বরাত দিয়েছিলেন।”জানা গিয়েছে, প্রতিটি পাখা তৈরির জন্য আদিবাসী শিল্পীদের দেড়শো টাকা করে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক পাখায় অতিথিদের জন্য একটি করে বার্তা দেওয়া হয়েছে। ইংরেজিতে লেখা বার্তায়, ‘দয়া করে এই পাখা সঙ্গে রাখুন’, ‘আদিবাসী শিল্পীর দ্বারা এই পাখা বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে’ ইত্যাদি লেখা রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.