Advertisement
Advertisement

Breaking News

Bengal BJP

প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক আটকাতে ব্যর্থ বঙ্গ বিজেপি, সুকান্তদের সময়ই দেননি মোদি

শুক্রবার বিকেলে মুখোমুখি হওয়ার কথা মোদি-মমতার।

Bengal BJP leaders failed to stop the PM Modi-Mamata Banerjee meeting। Sangbad Pratidin
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:August 5, 2022 9:15 am
  • Updated:August 5, 2022 9:15 am  

বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বৈঠক বাতিল করাতে বঙ্গ বিজেপির (BJP) চেষ্টা বিফলে গেল। তাতেও দমে না গিয়ে মমতার সঙ্গে আজ, শুক্রবার বিকেলে নির্ধারিত বৈঠকের আগেই প্রধানমন্ত্রী যাতে বাংলার বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন, সেই চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কিন্তু তাতেও নিরাশ হতে হয়েছে তাঁদের। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের পক্ষ থেকে কোনও সাড়া মেলেনি। বিষয়টি যে আপাতত ঝুলে রয়েছে সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

মোদি-মমতা বৈঠকের সময়সূচি প্রকাশে‌্য আসতেই তড়িঘড়ি সুকান্তবাবু রাজ্য বিজেপি সাংসদরা অবিলম্বে মোদির সঙ্গে দেখা করতে চান এই অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কাছে। সেই বৈঠক যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতা বৈঠকের আগেই তাঁরা করতে চাইছেন সেই বার্তাও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মারফত প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর পর্যন্ত পৌঁছেও দিয়েছিলেন সুকান্ত। তবে কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বঙ্গ বিজেপির দাবিকে কোনও গুরুত্ব দিতে রাজি হয়নি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।

Advertisement

[আরও পড়ুন: হাই কোর্টে ধাক্কা ঝাড়খণ্ডের ধৃত বিধায়কদের, সিআইডিকে তদন্ত চালানোর অনুমতি বিচারপতির]

সূত্রের খবর, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছ থেকেও এ বিষয়ে বিশেষ সাড়া পাননি বঙ্গ বিজেপি নেতারা। মোদি-মমতা বৈঠক পাকা হতেই তা বন্ধ করতে তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছিল বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। প্রথমে দিল্লি এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কাছে বৈঠক নিয়ে আপত্তির কথা জানান রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যে যে সময়ে তাঁদের দল রাস্তায় নেমে শাসকদলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে তখন মোদি-মমতা বৈঠক হলে দলের কর্মীদের মনোবল ধাক্কা খেতে পারে বলেও শাহ-নাড্ডাদের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। একই রাস্তায়ে হেঁটে সুকান্তও আলাদাভাবে দরবার করেছিলেন শাহ-নাড্ডার কাছে।

শুভেন্দু, সুকান্তর আপত্তি শুনলেও তাতে বিশেষ গুরুত্ব দেননি দুই নেতাই। বরং, তাঁরা সুকান্তকে এই বার্তাই দিয়েছেন যে যে কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন। তারপরেও অবশ্য দমে যাননি সুকান্ত। সটান প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কাছে দেখা করার অনুরোধ করে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সেই চেষ্টাও এখনও বিশ বাঁও জলেই রয়ে গিয়েছে। বঙ্গ বিজেপির সাংসদদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দেখা না করার নজির অবশ্য নতুন নয়।

[আরও পড়ুন: নকশা বোনায় অসামান্য কৃতিত্ব, জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছে বাংলার ‘তন্তুজ’, প্রাপক আরও ৭ তাঁতশিল্পী]

এর আগেও বঙ্গ বিজেপি সাংসদদের প্রাতরাশ বৈঠকের জন্য ডাকার পরেও তা বাতিল করেছিলেন মোদি। এদিকে, মোদি-মমতা বৈঠক যে বঙ্গ বিজেপি আটকাতে চেয়েছিল তা স্পষ্টই বোঝা গিয়েছে প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা বর্তমান কেন্দ্রীয় পদাধিকারী দিলীপ ঘোষের কথায়। তিনি বলেছেন, “রাজ্যে বড় কোনও ঘটনা ঘটলে প্রতিবারই এটা করে থাকেন মমতা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের পরেই মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা যায়। এই বৈঠকের অপব্যবহার যাতে না হয় সেটা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দেখা উচিত। আমাদের কর্মীরা মার খাচ্ছেন। তাদের উপর লাগাতার আক্রমণ হচ্ছে। রাজ্যে দুর্নীতি হচ্ছে সেই সময় এই ধরনের বৈঠক যাতে সহায়ক না হয় সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আমরা অবশ্যই সাবধান করব।”

এদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) সঙ্গে তাঁর বৈঠকে বাংলায় তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআইয়ের অভিযান নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে ভাষণ দিতে গিয়ে তা স্বীকার করে নিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শুধু তাই নয়, পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেপ্তারের পর আগামিদিনে ইডি-কে নামিয়েই যে বিজেপি রাজে‌্য খেলবে তাও বৃহস্পতিবার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। কলকাতার ধর্মতলায় দলের অবস্থান কর্মসূচির মঞ্চে সুকান্ত বলেন, “অমিত শাহর সঙ্গে আমার কী কথা হয়েছে তা বলব না। শুধু এটুকু বলতে পারি, অপেক্ষা করুন। ওয়েব সিরিজ তো সবে শুরু হয়েছে। দুটো এপিসোড হয়েছে। আরও এপিসোড আসবে। একেকটি পর্বে রোমহর্ষক কাহিনি আসবে। অপা পর্বের পর ধপা পর্ব আসবে।”

সুকান্তর এই বেফাঁস স্বীকারোক্তির পর তৃণমূল কংগ্রেসের স্পষ্ট অভিযোগ, “ইডি-সিবিআই যে বিজেপির শাখা সংগঠন হয়ে গিয়েছে, তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে গেরুয়া নেতাদের বৈঠক ও সুকান্তর দাবি থেকে স্পষ্ট। আসলে ইডির কাজই হল বিজেপির রাজনৈতিক সদিচ্ছা পূরণ করা এবং তৃণমূলকে হেনস্তা করা। জনসমর্থন না পেয়ে বাংলায় সিবিআই ও ইডিকে ঢাল করে নিজেদের ক্ষমতা জাহির করছে বিজেপি।” রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বাংলায় পরাজয়ের প্রতিশোধের লক্ষ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কি বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ইডি অভিযান পরিচালনা করছেন?

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement