সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সময়ের অনেক আগেই পৃথিবীর আলো দেখেছে সে। কিন্তু, ওজন তো মাত্র ৪০০ গ্রাম। এই শিশুকে কীভাবে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব? রীতিমতো চ্যালেঞ্জে মুখে পড়েছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, হাল ছাড়েননি তাঁরা। দীর্ঘ ছয় মাসের চিকিৎসায় শিশুটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে এনে নজির গড়লেন রাজস্থানের উদয়পুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসকরা। তাঁদের দাবি, ভারতে তো বটেই, দক্ষিণ এশিয়ায় এই শিশুটি সবচেয়ে কম ওজনের জীবিত সদ্যোজাত।
[সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে মহাকাশে ৩১টি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ ইসরো-র]
প্রায় ৩৫ বছরের বিবাহিত জীবন। অবশেষে গর্ভে সন্তান এসেছিল উদয়পুরের এক মহিলা। কিন্তু, গর্ভাবস্থার মাঝপথেই ঘটল বিপত্তি! চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই মহিলার রক্তচাপ কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছিল না। পরিস্থিতি এতটাই সংকটজনক ছিল, যে গর্ভস্থ ভ্রুণের শরীরেও ঠিকমতো রক্ত পৌঁচ্ছিল না। তাই অপারেশন করে শিশুটি পেট থেকে বের করে আনা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। সময়ের অনেক আগেই গত বছরের জুনে সন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। জন্মের সময় শিশুটি ওজন ছিল মাত্র ৪০০ গ্রাম। উচ্চতা সাড়ে আট ইঞ্জি। চিকিৎসকের দাবি, আঙুলের নখের থেকে সামান্য বড় ছিল সদ্যোজাতের পা-টি। জন্মের পর নিঃশ্বাস পর্যন্ত পড়ছিল না। কিন্তু, এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নিজেদের প্রথম সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন ওই দম্পতি। চেষ্টার কসুর করেননি চিকিৎসকরাও। আর তাতেই মিলল সাফল্য। ছয়মাসের চিকিৎসায় এখন পুরোপুরি সুস্থ মানুষী নামে ওই শিশুটি। হাসপাতাল ছাড়াও পেয়ে গিয়েছে মা ও শিশু।
[নৌবাহিনীকে ‘অপমান’ করেছেন নিতীন গড়করি, অভিযোগ কংগ্রেসের]
জন্মের পর থেকে প্রবল শ্বাসকষ্টে ভুগছিল শিশু। তাই প্রথমেই তাকে নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়। হাসপাতালের নিকু বিভাগের প্রধান ডা: জাভেদ বলেন, ‘এত কম ওজনের সদ্যোজাতকে বাঁচিয়ে রাখাটা রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং। ভারতীয় উপমহাদেশে এত কম ওজনের শিশুর বেঁচে থাকার নজির নেই।’ তাঁর সংযোজন, ‘আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, শিশুটিকে সংক্রমণ থেকে দুরে রাখা। আমাদের টিম সেই কাজ খুব ভালভাবেই করতে পেরেছি। নিকুতে থাকার সময়ে শিশুটি বেশ কয়েকবার রক্তও দিতে হয়েছে।’ সবমিলিয়ে ২১০ দিন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ছিল শিশুটি। এই সময়ে ৪০০ গ্রাম থেকে তার ওজন বেড়ে হয়েছে ২ কিলো ৪০০ গ্রাম। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এখন পুরোপুরি সুস্থ শিশুটি। বৃহস্পতিবার মা ও শিশু দুজনকেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
[ধর্ষণ করে মহিলারাও, তাদের সাজা নয় কেন? প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.