সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা রুখতে লকডাউন। আর সেই লকডাউন মানতে কড়া নজরদারি। নিয়ম ভাঙলেই অনেকক্ষেত্রে কপালে জুটছে পুলিশের লাঠি। এবার সেই লাঠির ঘায়েই উত্তরপ্রদেশে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। খাবার কিনতে বেরিয়ে পুলিশের অত্যাচারের মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে। বৃহস্পতিবার রাতেই গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। দু’দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শনিবার সরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। ছাজ্জাপুরের কিশোরের মৃত্যুতে যোগী আদিত্যনাথের পুলিশকেই কাঠগড়ায় তুলছেন গ্রামবাসীরা।তবে তদন্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, লকডাউনের পর থেকেই ভাঁড়ারে টান পরেছে। বৃহস্পতিবার রাতে খিদের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে বিস্কুট কিনতে বেরিয়েছিলেন আম্বেদকর নগরের ছাজপুর গ্রামের বছর উনিশের রিজওয়ান। লকডাউন ভাঙার অভিযোগ সেই সময় পুলিশ তাকে বেধরক মারধর করে বলে দাবি। প্রত্যদর্শীদের অভিযোগে, দোকানে আরও খরিদ্দাররা ছিল, কিন্তু তাঁদের কিছু বলেনি পুলিশ। ঘটনা প্রসঙ্গে রিজওয়ানের বাবা মহম্মদ ইজরায়েলি বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে আমার ছেলে আর খিদের জ্বালা সহ্য করতে পারছিল না। বিস্কুট কিনতে বেরিয়েছিল। সেইসময় পুলিশ তাকে বেধড়ক মারধর করে।” কাঁদতে কাঁদতে তাঁর হাহাকার, “করোনা নয়, পুলিশই আমার ছেলেকে কেড়ে নিল।”
গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, লকডাউন থাকায় পুলিশ রিজওয়ানকে বিস্কুট কিনতে দিচ্ছিল না। রিজওয়ানের কাকা মুন্নার কথায়, সেখা আরও খরিদ্দাররা ছিলেন, তাদের পুলিশ আটকাল না। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলল, পুলিশ রাইফেলের বাট, লাঠি দিয়ে তাকে মারছিল। পরে কয়েকজন পুলিশকর্মী তাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যায়।” তাঁদের আরও অভিযোগ, “লকডাউননের মেয়াদ বৃদ্ধির পরই প্যানিক-বাইয়িং চলছিল। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন বাড়ি বাড়ি খাবর পৌঁছে দিয়ে যাবেন। কিন্তু ২৫ মার্চ থেকে কোনও সাহায্যই পাইনি। বাড়িতে যা রসদ ছিল সব শেষ। বাইরে বের হলেই পুলিশ মারছে। জানিনা এরপর কীভাবে চলবে!”
অভিযুক্তদের রেহাই দেওয়া হবে না পলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অবিনাশ কুমার মিশ্র। তাঁর কথায়, “সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।” একই সুর শোনা গেল পুলিশ সুপার অলোক প্রিয়দর্শীর গলাতেও। তাঁর কথায়, “তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.