সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক যেন কেঁচো খুঁড়তে কেউটে। দিল্লির এক ৮০ বছরের বৃদ্ধার ক্রেডিট কার্ড থেকে ১ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা চুরির তদন্তে নেমে পুলিশের জালে উঠে এল আরও ভয়ানক তথ্য। মাত্র ১০ থেকে ২০ পয়সায় বিক্রি করা হচ্ছে প্রায় এক কোটি ভারতীয়ের ব্যাঙ্কের নথি। তার মধ্যে ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড নম্বর-সহ গ্রাহকের একাধিক নথি রয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, কোনও ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি ব্যাঙ্ক, কল সেন্টার এবং অন্যান্য বেশ কিছু জায়গা থেকে চুরি করে ঠগদের হাতে তুলে দেওয়া হত।
কয়েকদিন ধরেই দক্ষিণ দিল্লির গ্রেটার কৈলাসের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধার ক্রেডিট কার্ড থেকে ১ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা চুরি যাওয়ার তদন্ত করছিল দিল্লি পুলিশ। সেই তদন্তের সময় এই চক্রের কথা জানতে পারে তাঁরা। ইতিমধ্যে জালিয়াতি চক্রের মূল পাণ্ডাকে আটক করেছে পুলিশ। এরপরেই তার কাছ থেকে এক কোটিরও বেশি গ্রাহকের ব্যাঙ্কের গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। যার মধ্যে গ্রাহকের কার্ড নম্বর, কার্ডের মালিকের নাম, জন্ম তারিখ এবং মোবাইল নম্বর রয়েছে। তবে যেসমস্ত গ্রাহকদের নম্বর রয়েছে, তাঁদের বেশিরভাগই প্রবীণ নাগরিক।
ঘটনায় আটক হওয়া পুরণ গুপ্তা জানিয়েছে, সে সাধারণত একসঙ্গে ৫০ হাজার লোকের নথি বিক্রি করত। ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে সে নথিগুলি অন্যদের কাছে বিক্রি করত। মুম্বইয়ের এক ব্যক্তির কাছ থেকেই ওই নথিগুলি যোগাড় করত সে। জেরায় সে আরও জানায়, ব্যাঙ্ক কর্মী হিসেবে ফোন করা হয় গ্রাহকদের। তারপরে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য একটি জায়গায় টাকা লেনদেন হচ্ছে, এই ভুয়ো খবর গ্রাহকদের জানিয়ে তাঁদের কাছ থেকে সিভিভি নম্বর এবং ওটিপি নম্বর নিয়ে নিত তারা। অন্যান্য নথি থাকায় অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিতে এরপর আর কোনও সমস্যাও হত না। শুধু ব্যাঙ্ক কর্মী নয়, নানা রকম প্রলোভন বা কার্ড ব্লক হয়ে যেতে পারে, এধরণের আশংকার কথা বলেও কাজ হাসিল করা হত বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে গত ৬ এপ্রিল প্রতারনার দায়ে আশিষ কুমার নামে দিল্লির জে কে রেসিডেন্ট থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। প্রাক্তন ব্যাঙ্ক কর্মচারী ও একটি অর্থ লেনদেনকারী সংস্থার সেলস এগজিকিউটিভ হিসেবে কাজ করতেন ওই ব্যক্তি। পরে ২০১৩ সালে নিজের একটি ওয়েব পোর্টাল খোলেন। সেটির আড়ালেই সাধারণ নাগরিকদের প্রতারনা করতেন তিনি। পুলিশ জানতে পেরেছে আটক পুরানের কাছ থেকেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত নথি কিনত আশিষ। এই চক্রে আর কে কে জড়িত রয়েছে, জানতে জোরকদমে তদন্তে চালাচ্ছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.