বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: এবছরের দুর্গাপুজোটা মৎস্যপ্রেমী বাঙালির কাছে স্বাদ-হীন হয়ে উঠেছিল। প্রতিবেশী বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের স্রেফ একটি ঘোষণায়। বলা হয়েছিল, এবার আর পুজোর সময় পদ্মার ইলিশ পাঠানো হবে না ভারতে। প্রতি বছর যা সৌজন্য উপহার হিসেবে পাঠানো হতো শেখ হাসিনার তরফে। ক্ষমতার হাতবদল হতেই এই রীতিতে ছেদ পড়তে চলেছিল। তা নিয়ে দুদেশের মধ্যে হালকা তিক্ত পরিবেশও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আচমকাই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলল বাংলাদেশ। শনিবার ভারত সরকারকে জানানো হল, ইলিশ পাঠানো হবে বাংলাদেশের তরফে। ২৪ তারিখের মধ্যে রপ্তানিতে আগ্রহী সংস্থাগুলিকে আবেদন জানাতে হবে সরকারি দপ্তরে।
শনিবার বাংলাদেশের ইউনুস সরকারের তরফে দুর্গাপুজো উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের অনুরোধ ও দেশের বিভিন্ন রপ্তানিকারক সংস্থার আবেদনের ভিত্তিতে এবছর পুজোর মরশুমে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। মোট ৩০০০ মেট্রিক টন ইলিশ এপার বাংলায় পাঠানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যারা রপ্তানি করতে চান, তাদের আবেদন করতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ। তার পর কোনও আবেদন আর গৃহীত হবে না।
পদ্মার ইলিশ বনাম তিস্তার জল। এনিয়ে শেখ হাসিনার আমল থেকে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে আবছা একটা দ্বন্দ্ব চলছিল। তা সত্ত্বেও প্রতি বছর পুজোর উপহার হিসেবে ভারতের সীমান্তবর্তী বাজারগুলিতে ইলিশ রপ্তানি হতো। কিন্তু গত আগস্টে হাসিনা সরকারের পতন এবং অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সে দেশের মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ঘোষণা করেছিলেন, “এবারের দুর্গোৎসবে বাংলাদেশের হিন্দুধর্মাবলম্বী-সহ অন্যান্য নাগরিকরা যেন ইলিশ খেতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করা হবে। ভারতের চেয়ে দেশের জনগণকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে। আমরা ক্ষমা চাইছি। কিন্তু আমরা ভারতে কোনও ইলিশ পাঠাতে পারব না। এটা দামি মাছ। আমরা দেখেছি আমাদের দেশের মানুষই ইলিশ খেতে পারেন না। কারণ সব ভারতে পাঠানো হয়। যা থাকে সেগুলো অনেক দামে খেতে হয়। আমরাও দুর্গোৎসব পালন করি। আমাদের জনগণও খেতে পারবে।” কিন্তু তাঁর সেকথা আর কার্যকর হল না। শনিবার উপসচিব সুলতানা আক্তার নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.