ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশে প্রায় দেড় মাস ধরে জেলবন্দি ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভু। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম আদালতে ফের খারিজ হয়ে যায় তাঁর জামিনের আবেদন। অনেকেই বলছেন, বিচারের নামে কার্যত আইনি প্রহসন করছে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। চিন্ময় প্রভুর সুবিচারের দাবিতে ফের সুর চড়াল ভারতও। ঢাকাকে কড়া বার্তা দিয়ে দিল্লি বলল, ‘সুবিচার করুন।’
গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলাম চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর করে দেন। এদিন সকাল সোয়া ১০টার দিকে হওয়া শুনানিতে বন্দি সন্ন্যাসীর পক্ষে সওয়াল করেন সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবীর একটি দল। তবে নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে চিন্ময়কে আদালতে হাজির করা হয়নি। আদালতে আইনজীবীর উপস্থিতিতে ভারচুয়াল হাজিরায় জামিন শুনানি হয়। আজ শুক্রবার এনিয়ে সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে কথা বলেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তিনি বলেন, “ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের (Chinmoy Das) জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। আমরা তাঁর দ্রুত সুবিচারের দাবি জানাচ্ছি।”
বলে রাখা ভালো, সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেছে ইউনুস সরকার। দোষী সাব্যস্ত হলে সাজা যাবজ্জীবন জেল। তবে হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশে (Bangladesh) মৌলবাদীদের হাতে নিপীড়িত হিন্দুদের হয়ে আওয়াজ তোলার জন্যই তাঁকে নিশানা করা হচ্ছে, একথা স্পষ্ট। গতকাল চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিমউদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপত্তি জানিয়ে বলেছে, এটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা, এর সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছে। কেউ ক্ষুব্ধ হলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
গত ২৫ নভেম্বর বিকালে ইসকনের সন্ন্যাসীকে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ২৬ তারিখ চট্টগ্রামের আদালতে তোলা হয় তাঁকে। আনা হয় রাষ্ট্রদোহ মামলা। শুনানি শেষে জামিন খারিজ হয়ে যায় চিন্ময় প্রভুর। এরপর হামলার মুখে পড়ে আইসিইউ-তে ভর্তি হতে হয় তাঁর আর এক আইনজীবীকে। এই গ্রেপ্তারি নিয়ে বাংলাদেশে প্রতিবাদের ঝড় তোলেন হিন্দুরা। কড়া বার্তা দেয় ভারতও। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। প্রায় দেড় মাস হয়ে গেলেও গারদের পিছনেই রয়েছেন চিন্ময় প্রভু। গত ৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে তাঁর শুনানি ছিল। কিন্তু ‘প্রাণভয়ে’ ৫১ জন আইনজীবী দলের কেউই চিন্ময়ের হয়ে আদালতে সওয়াল করতে আসেননি। ফলে পিছিয়ে যায় জামিন মামলার শুনানি। পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয় ২ জানুয়ারি।
এর মাঝেই হিন্দু সন্ন্যাসীকে জেলবন্দি করে রাখতে নানা ফন্দি আঁটে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার! কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট সংবাদমাধ্যমে দাবি করে, চিন্ময় প্রভুর মুক্তি আটকাতে ৭০ জন হিন্দু সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। যাতে কেউ তাঁর হয়ে আদালতে দাঁড়াতে না পারেন। এবার ফের একবার জামিন খারিজ হয়ে যাওয়ায় সুবিচার চাইল ভারতও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.