সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশ সরকার হরকত-উল-জেহাদ-আল-ইসলামি (হুজি) সংগঠনের প্রধান মুফতি আবদুল হান্নান ও তার দুই সহযোগীকে বুধবার রাতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিল। তাদের রাতে ফাঁসি দেওয়া হয়। ২০০৪ সালের ২১ মে বাংলাদেশের সিলেটে বিখ্যাত হজরত শাহজালালের মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে এসে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর জখম হন ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরি। তাঁর তিন সঙ্গি নিহত হন। সন্ত্রাসী হামলা চালানোর অভিযোগ ছিল হান্নান-সহ তিন হুজি জঙ্গির বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, হান্নান এবং তার এক সঙ্গী শাহেদুল ওরফে বিপুলকে রাত ১০ নাগাদ গাজিপুরের কাশিমপুর জেলে ফাঁসি দেওয়া হয়। তাঁর আরও এক সঙ্গী দিলওয়ার হোসেন রিপনকে সিলেট জেলে ফাঁসি দেওয়া হয়। গাজিপুরের এসপি হারুন উর রশিদ জানিয়েছেন, হান্নান এবং রিপনের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত করা হয়ে গিয়েছে এবং কড়া নিরাপত্তায় ওই দেহগুলি পরিজনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২১৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বুধবার সাত সকালেই ঢাকায় এসে মুফতি আবদুল হান্নানের সঙ্গে তাঁর স্বজনরা দেখা করেন। কেননা এটি তাদের জন্য ছিল শেষ দেখা ও কথা বলার সুযোগ। বুধবার সকালে ঢাকার অদূরে গাজিপুরের (রাজা হরিশচন্দ্রের ভাওয়াল পরগণা) কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে চার পরিজন মুফতি হান্নানের সঙ্গে দেখা করেন। মুফতি হান্নানের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য তাঁর স্বজনদের কাছে মঙ্গলবার বার্তা পাঠিয়েছিল কারা কর্তৃপক্ষ। বার্তা পেয়ে দেখা করেন স্ত্রী জাকিয়া পারভিন, দুই মেয়ে নিশাত ও নাজনিন এবং বড় ভাই আলি উজ্জামান। সিলেট জেলায় ২০০৪ সালে বাংলাদেশে তৎকালীন ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরির ওপর গ্রেনেড হামলা ও তিনজন নিহত হওয়ার মামলায় মুফতি হান্নান এবং তাঁর সহযোগী বিপুল ও দিলওয়ার হোসেন ওরফে রিপনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগেও তা বহাল থাকে। রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে তিনজনের করা আবেদন খারিজ হয়। তিনজনই প্রাণভিক্ষা চেয়ে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন। গত রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, তাঁদের প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.