সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাজমহল চত্বরে পুজো-আরতি করছেন রাষ্ট্রীয় বজরং দলের মহিলা শাখার জেলাধিপতি! এমন দৃশ্যের ভিডিও ঘিরে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া। বিতর্কের ঝড় উঠেছে নানা মহলে। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই) এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) -এর তরফে ভিডিওর সত্যতা যাচাই করে দেখা হবে বলে জানানো হয়েছে।
শনিবারই নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয় একটি ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে, আরবিডি-র মহিলা শাখার জেলাধিপতি মীনা দিবাকর তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে তাজমহলের ভিতর আরতি করছেন। যে কথা তিনি নিজে স্বীকারও করেছেন। বলেন, “আমরা ধূপ, দেশলাই আর গঙ্গাজল নিয়ে তাজমহল চত্বরে প্রবেশ করি। তারপর সেখানে পুজো-আরতি করা হয়। আসলে জায়গাটি ‘পবিত্র’ করছিলাম আমরা। কারণ বাস্তবে এটি একটি শিব মন্দির। প্রতিদিন নমাজ পড়ে এর পবিত্রতা নষ্ট করা হচ্ছে।” এখানেই থামেননি তিনি। সঙ্গে জুড়ে দেন, “তেজো মহালয়া শিব মন্দিরের জন্যই পরিচিতি পেয়েছে তাজমহল। এই স্থানে শুধুমাত্র শুক্রবারই নমাজ পড়ার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও অন্যান্য দিন এখানে নমাজ পড়া হয়। সেই কারণেই আমরা আরতি করে জায়গাটাকে পবিত্র করছিলাম। সপ্তাহের অন্যান্য দিন নমাজ পড়া রোখার জন্য যদি আমাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়, তাহলে তার জন্য আমরা প্রস্তুত।”
দিন কয়েক আগেই প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ নির্দেশ দিয়েছিল, এই ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধে শুধুমাত্র শুক্রবার করেই নমাজ পড়তে পারবেন মুসলিমরা। যা নিয়ে দেখা দেয় বিতর্ক। তবে এএসআই-এর তরফে জানানো হয়, তারা শুধু সুপ্রিম কোর্টের আদেশ বাস্তবায়িত করেছে। এর বেশি কিছু নয়। কিন্তু বজরং দলের দাবি, নির্দেশ সত্ত্বেও সপ্তাহের অন্যান্য দিনও নমাজ পড়া চলছে। যা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আর সেই কারণেই এমন প্রতিবাদ তাদের। তবে এই ঘটনায় দারুণ ক্ষুব্ধ মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশ। মীনা দিবাকরের এমন কাণ্ডকারখানা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষকেই উসকে দিল বলে মত অনেকের।
তবে এএসআই এবং সিআইএসএফ জানাচ্ছে, তাজমহল চত্বরে দেশলাই নিয়ে ঢোকার অনুমতি নেই। তা সত্ত্বেও কীভাবে তিনি সেসব নিয়ে প্রবেশ করলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করে তাজমহলে আরতি করার জন্য মীনা দিবাকরের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার দাবি তুলেছেন কংগ্রেসের সিটি ইউনিটের সভাপতি হাজি জামিলউদ্দিন কুরেশি। তাঁর অভিযোগ, এভাবেই শহরে সাম্প্রতিদায়িকতার আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.