সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গো-মাংস বহনকারী সন্দেহে এক ব্যক্তিকে হত্যায় এবার নাম জড়াল বজরং দলের। ঘটনার পর থেকে উত্তাল ঝাড়খণ্ডের রামগড়। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মৃতের স্ত্রীর দাবি, হামলাকারীরা বজরং দলের সদস্য। বাড়ির একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে ছয় ছেলেমেয়েকে নিয়ে আতান্তরে ছাপোষা ওই বধূ। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গো-মাংস গুজবে দেশের নানা প্রান্তে বেড়ে চলেছে হিংসার ঘটনা। গণপিটুনি, মৃত্যু। কিছুই বাকি নেই। খোদ প্রধানমন্ত্রী স্বঘোষিত এই গো-রক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দিলেও অবস্থার এতটুকু বদল হয়নি। গত সপ্তাহে ঝাড়খণ্ডের রামগড়ে খুন হয়েছিলেন আলিমুদ্দিন ওরফে আসগর আকি নামে এক ব্যক্তি। গো-মাংস নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল। মৃতের স্ত্রী মরিয়ম এই নিয়ে মুখ খুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, দুর্বৃত্তরা বজরং দলের সদস্য। তাঁর স্বামী কয়লার ব্যবসা করতেন। তিনি মাংস ব্যবসা করতেন বলা হলেও তা ঠিক নয়। ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল ৪৫ বছরের আসগরকে বেধড়ক মারধর করা হয়। ঝাড়খণ্ডের রামগড়ের মানুয়ায় থাকতেন আসগর। তাঁর ৬ সন্তান। এর মধ্যে তিনজন মেয়ে। স্বামীর অকাল মৃত্যুতে ছয় ছেলেমেয়েকে নিয়ে বিপদে পড়েছেন মরিয়ম। অভিযুক্তদের জেল নয়, তাদের নরকে পাঠানো উচিত বলে মরিয়ম মনে করেন। মানুয়া গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা সংখ্যালঘু। আসগরের এক আত্মীয় এঘটনার জন্য পুলিশকে দুষেছেন।
আসগরের মৃত্যুর পর থেকে হিংসার আগুনে জ্বলছে রামগড়। ঘটনার জেরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। গ্রামে গ্রামে পুলিশ পিকেট বসলেও, উত্তেজনা কমেনি। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে বজরং দলের রামগড় শাখার প্রধান ছোটু ভার্মার। বিপদ বুঝে থেকে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে ঝাড়খণ্ডের বজরং দলের সভাপতি দেবেন্দ্র গুপ্ত অবশ্য এই ঘটনার সঙ্গে দূরত্ব রাখতে মরিয়া। তাঁর পাল্টা দাবি, কিছু ঘটলেই বজরং দল এবং আরএসএসের নাম কৌশলে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। জুন মাস থেকে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ঝাড়খণ্ডে গো-মাংস গুজবে এ ধরনের ঘটনা ঘটল। গত মাসে গিরিডিতে এক মুসলমান ব্যক্তির বাড়িতে মরা গরু মিলেছে। এই অভিযোগে তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এলাকার বাসিন্দারা বলছেন আসগরের ঘটনায়, পুলিশের ওপর তাদের ভরসা চলে গিয়েছে। এই বিশ্বাস ফেরানোই রামগড়ে প্রশাসনের এখন সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.