সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু’বছরের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছিল। পরিবার নিয়ে দেশে ফেরার জন্য ব্যাকুল ছিল মন। সুযোগও মিলেছিল বন্দে ভারত মিশনের দৌলতে। সুদূর দুবাই থেকে ঘরে ফেরার আনন্দ ধরছিল না। বিমানে বসে পরিবারের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছিলেন ‘Back to home’। কিন্তু ঘরে ফেরা আর হল না। এটাই হয়ে গেল শেষযাত্রা। কোঝিকোড়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় মৃতদের তালিকায় নাম রয়েছে সেই যুবক শরাফু পিলাসেরির। তাঁর স্ত্রী আমিনা বিপন্মুক্ত হলেও একমাত্র কন্যা ফতিমা কোঝিকোড় মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
৩৫ বছরের শরাফু কর্মসূত্রে দুবাইয়ে থাকেন। কিন্তু কিছুদিন আগে তাঁর ওয়ার্কি ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। করোনা পরিস্থিতিতে দেশে ফেরার জন্য অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছিলেন। মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে অবশেষে বন্দে ভারত মিশনের সৌজন্যে শুক্রবারই এয়ার ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেস বিমানে কোঝিকোড় ফিরছিলেন তিনি। সঙ্গে স্ত্রী এবং মেয়ে। বিমানের সিটে বসে পিপিই কিট, ফেস শিল্ড-মাস্ক পরে ঘরে ফেরার উচ্ছ্বাস সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখিয়েছিলেন শরাফু। কে জানত এটাই শেষ যাত্রা হবে! রানওয়েতে চাকা পিছলে গিয়ে খাদে পড়ে দু’টুকরো হয়ে যায় এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। পাইলট-সহ অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায়, আহত শতাধিক।
শরাফুর মর্মান্তিক পরিণতির জন্য দুঃখপ্রকাশ করে ফেসবুকে লিখেছিলেন তাঁর সতীর্থ শাফি। লকডাউনে কেরলের দুর্গতদের জন্য দুবাইতে বসেই অর্থ সাহায্য করেছিলেন শরাফু। তিনি আর নেই একথা বিশ্বাসই করতে পারছেন না তাঁর বন্ধু। কেরলে ফিরে যাওয়ার আগে বন্ধুদের আলবিদা জানিয়েছিলেন শরাফু। তখনই কেমন একটা অন্যমনস্ক লাগছিল তাঁকে, জানিয়েছেন শাফি। হয়তো অঘটনের কথা আঁচ করতে পেরেছিলেন শরাফু, মত তাঁর বন্ধুর। যাওয়ার আগে দুস্থদের দান করার জন্য কিছু টাকাও দিয়ে গিয়েছিলেন শরাফু। তা ভেবেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর বন্ধু শাফি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.