সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুরমিত রাম রহিমের পর আরও এক স্বঘোষিত ধর্মগুরুর সন্ধান মিলল। ধর্মের বর্ম সামনে রেখেই যার আশ্রমে চলত অবাধে যৌনাচার। জোর করে আটকে রাখা হত নাবালিকাদের। তারপর খুশিমতো যৌনসঙ্গী হিসেবে ব্যবহার করা হত তাদের। দিল্লির রোহিনি আশ্রমে অভিযান চালিয়ে রীতিমতো সেক্স ব়্যাকেটের সন্ধান পেল পুলিশ।
[ তাণ্ডব চালিয়ে স্টেশনে আগুন, মাওবাদীদের হাতে অপহৃত সহকারী স্টেশন মাস্টার ]
রোহিনি আশ্রমের সর্বময় কর্তা বীরেন্দ্র দেব দিক্ষীত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, বছর পঁচাত্তরের এই ব্যক্তি ধর্মের নামে নিজের যৌন লালসা চরিতার্থ করে চলেছে দীর্ঘদিন। দেখেশুনে এত বয়স্ক বলে মনে হত না তাকে। রীতিমতো সুস্বাস্থ্যের অধিকারী সে। গোড়ার দিকে তার মতলব কেউ বুঝতে পারত না। নিজেকে ধর্মগুরু বলেই পরিচয় দিত সে। আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয় নামে আশ্রম খুলে সাধারণ মানুষকে আশ্রমের দিকে টেনে আনত সে। বহু অভিভাবকই তাঁদের কন্যাদের এই আশ্রমে রেখে আসতেন। ছুটির সময় ধর্মশিক্ষা পাবে মেয়েরা, এমনটাই প্রত্যাশা ছিল অভিভাবকদের। কিন্তু সেই ফাঁদ পেতেই নাবালিকাদের ভোগ করত ওই স্বঘোষিত ধর্মগুরু। অভিযোগ, স্ট্যাম্প পেপারে সে লিখিয়ে নিত যে নাবালিকারা স্বেচ্ছায় আশ্রমে এসেছে। কেউ তাদের কোনওরকম জোর করেনি। এরপরই কুকর্মে লাগানো হত তাদের। অনুগামীদের মেয়েদের আশ্রমে যোগ দেওয়ার ব্যাপারেও জোর খাটাত ওই বাবা। তারপর চলত অবাধে যৌনাচার। এক ভক্ত জানাচ্ছেন, নগ্ন হয়ে শুয়ে পড়ত বাবা। তারপর নাবালিকাদের তার শরীরে তেল মালিশ করার নির্দেশ দেওয়া হত।
[ ‘মোদি বৃদ্ধ হয়েছেন, ওঁর এবার রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়া উচিত’ ]
অভিযান চালিয়ে পুলিশ দেখে, যেভাবে আশ্রম গড়ে তোলা হয়েছে তাতে নাবালিকাদের পালানোর কোনও উপায় থাকত না। ছোটছোট ঘর, গোপন কামরা, ঘোরানো সিঁড়িতে রীতিমতো গোলোকধাঁধা করে রাখা হযেছে। তার মধ্যেই ছিল গর্ভ মহল। যেখানেই কুকর্মে লিপ্ত হত বাবা। নাবালিকাদের মধ্যে কে কবে ঋতুমতী হচ্ছে তার খোঁজ রাখত বাবা। খবর মিললেই সেই কিশোরীকে তুলে আনা হত। তারপর তার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হত ওই স্বঘোষিত ধর্মগুরু। ঋতুমতী হলেই মেয়েদের একটি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করানো হত। সেখানে লেখা থাকত স্বেচ্ছায় আশ্রমে থাকতে চায় তারা। সেই চুক্তিপত্রের কপি অভিভাবক ও স্থানীয় থানাতেও পাঠিয়ে দেওয়া হত। আইনের চোখে ধুলো দিয়ে এভাবেই চলত যৌনাচার। মেয়েদের দেশের বিভিন্ন শহরে পাঠিয়ে দেওয়া হত। প্রায় অসহায় অবস্থাতেই তাদের যৌন হেনস্তার শিকার হতে হত। যদিও বাবার কুকীর্তি ফাঁস করেন অভিভাবকরাই। অভিযোগ এনে তাঁরা দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়। তার ভিত্তিতেই অভিযান চালিয়ে আরও এই স্বঘোষিত বাবার কীর্তি জানতে পারে পুলিশ।
[ শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতনের শিকার বধূ, তদন্তে যেতে তেলের টাকা চাইল পুলিশ! ]
পুলিশ সূত্রে খবর, মহিলা ভক্তদের গোলাপি শাড়ি আর সাদা ব্লাউজ ছিল পোশাক। বাবা তাদের নাম দিয়েছিল গোপিনী বা গোপিয়া। কৃষ্ণের যেরকম ষোলো হাজার গোপিনী ছিল, তারও পাশে সেই সংখ্যাক নারী থাকুক। এরকমটাই চাইত স্বঘোষিত ধর্মগুরু। সে কারণেই নাবালিকাদের জোর করে আশ্রমে রেখে দিত। চলত লীলা তথা যৌনাচার। বাবার ডেরায় তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর ওষুধ ও ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ মিলেছে। অনুমান, সেগুলি অবৈধ গর্ভপাতের কাজে লাগানো হত। দ্বাররক্ষী-সহ এক মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যদিও এখনও বাবার টিকির নাগাল মেলেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.