ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অযোধ্যা গণধর্ষণ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সপা নেতা মইন খান। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুঁড়ি চরম আকার নিয়েছে উত্তরপ্রদেশ রাজনীতিতে। বিধানসভাতেই এই ইস্যুতে সপার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এহেন পরিস্থিতি মাঝেই এবার নির্যাতিতা নাবালিকার গর্ভস্থ সন্তানের ডিএনএ টেস্টের দাবি তুলেছেন সপা প্রধান অখিলেশ যাদব। তাঁর এহেন দাবিতে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, কয়েক মাস আগে চাষের জমিতে কাজ করার সময় নাবালিকাকে নিজের বেকারিতে নিয়ে এসে ধর্ষণ করেন সপা নেতা মইন খান ও তাঁর বেকারির কর্মীরা। গোটা ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করা হয়। সেই ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে ২ মাসেরও বেশি সময় ধরে বেকারির মধ্যেই ১২ বছর বয়সি ওই নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে অভিযুক্তরা। এই ঘটনায় নাবালিকা গর্ভবতী হয়ে পড়লে প্রকাশ্যে আসে বিষয়টি। নাবালিকার মা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ জানাতে গেলেও সে অভিযোগ নেওয়া হয়নি। জানা যায়, যে জমিতে ওই পুলিশ ফাঁড়ি ছিল সেটি মইনের জমির উপর। এবং তা সরকারের তরফে ভাড়া নেওয়া হয়। ফলে সেখানে ওই সপা নেতার প্রভাব ছিল যথেষ্ট। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই তৎপর হয় যোগী সরকার। গ্রেপ্তার করা হয় মইনও তাঁর এক কর্মীকে। বিষয়টি নিয়ে সপার বিরুদ্ধে সরব হয় বিজেপি। রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করলে এই ঘটনায় মুখ খোলেন খোদ অখিলেশ।
এই ঘটনায় শনিবার এক্স হ্যান্ডেলে অখিলেশ লেখেন, ‘যার বিরুদ্ধে এই কুকীর্তির অভিযোগ উঠেছে তাঁর ডিএনএ টেস্ট করে ন্যায়ের রাস্তা বের করা উচিত। তা না করে রাজনৈতিক স্বার্থে শুধুমাত্র দোষারোপের খেলা চলছে। এই ঘটনায় যে অভিযুক্ত তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পথে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হোক।’ একইসঙ্গে তিনি আরও লেখেন, ‘তবে যদি ডিএনএ টেস্টের পর এই অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণিত হয় তবে সরকারের আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও যেন কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এটাই ন্যায়ের দাবি।’ তবে অখিলেশের বার্তার পর পালটা তাঁর বিরুদ্ধে ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
कुकृत्य के मामले में जिन पर भी आरोप लगा है उनका DNA TEST कराकर इंसाफ़ का रास्ता निकाला जाए न कि केवल आरोप लगाकर सियासत की जाए। जो भी दोषी हो उसे क़ानून के हिसाब से पूरी सज़ा दी जाए, लेकिन अगर DNA TEST के बाद आरोप झूठे साबित हों तो सरकार के संलिप्त अधिकारियों को भी न बख्शा जाए।…
— Akhilesh Yadav (@yadavakhilesh) August 3, 2024
বিজেপি আইটিসেলের সদস্য অমিত মালব্য এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘যেহেতু নির্যাতিতা নাবালিকা নিষাদ সমাজভুক্ত এবং ধর্ষক ওদের ভোট ব্যাঙ্ক তাই নির্যাতিতা গর্ভবতী হওয়ার পরও তাঁর কাছ থেক প্রমাণ চাওয়া হচ্ছে। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে কী প্রমাণ করতে চাইছেন? গণধর্ষণে কারা কারা যুক্ত তা কী ডিএনএ টেস্টে প্রমাণ হবে? গর্ভস্থ সন্তানের ডিএনএ টেস্টে একজন অপরাধীকে চিহ্নিত করা যাবে। বাকিরা কী অপরাধী নয়? অখিলেশের মতো ঘৃণ্য রাজনীতির কারবারিদের কাছ থেকে এর বেশি কিছু আশা করা যায় না।’ পাশাপাশি অখিলেশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যও। তিনি বলেন, ‘ওরা ওদের ভোট ব্যাঙ্ক হারানোর ভয় পাচ্ছে। যার ফলে ঘৃণ্য অপরাধের পরও অপরাধীর পাশে দাঁড়াচ্ছেন। তবে সরকার তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে।’
পাশাপাশি সপাকে তোপ দেগে মায়াবতী বলেন, ‘অযোধ্যা গণধর্ষণ মামলায় উত্তরপ্রদেশ সরকার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিক এটাই আমার আবেদন। তবে সপার বার্তা শুনে আমি স্তম্ভিত। নির্যাতিতার ডিএনএ টেস্টের দাবি তোলা হচ্ছে? সমাজবাদী পার্টি তাহলে স্পষ্ট করুক উত্তরপ্রদেশে তাদের সরকারের আমলে কতগুলি ডিএনএ টেস্ট করিয়েছিল তারা।’ অখিলেশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো। ২০১৪ সালে মুলায়ম সিং যাদবের ‘পুরুষ মানুষ এমন একটু আধটু ভুল হয়’ মন্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ”এক নাবালিকা ধর্ষিতা হয়েছে। তাঁর দলের এক সদস্যের বিরুদ্ধে উঠেছে ধর্ষণের অভিযোগ। অথচ ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে লাগাতার তাঁকে সমর্থন করা হচ্ছে। এটা আসলে সেই ডিএনএ যিনি বলেছিলেন ‘পুরুষ মানুষ এমন একটু আধটু ভুল হয়’।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.