সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শতাব্দী প্রাচীন বিবাদে ইতি টেনে অযোধ্যা মামলায় রায় ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সর্বসম্মতিতে শীর্ষ আদালতের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায়, শর্তসাপেক্ষে বিতর্কিত জমি দেওয়া হল রাম জন্মভূমি ন্যাসকে। অন্যদিকে অযোধ্যাতেই পাঁচ একর বিকল্প জমি দেওয়া হবে মুসলিম পক্ষ বা সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে। তবে খারিজ করে দেওয়া হয় আরেক মামলাকারী নির্মোহী আখড়ার দাবি। ১৯৯৩ সালের অযোধ্যা আইনের আওতায় তিন মাসের মধ্যে কেন্দ্রকে ট্রাস্ট গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কীভাবে এই বিতর্কিত জমি রাম জন্মভূমি ন্যাসকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? রামলালাই কেন এই জমির মালিকানা পেলেন? কে এই রামলালা? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
আইন অনুযায়ী, হিন্দু দেবতাকে এই মামলায় বিচারাধীন ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এই মামলায় ছোট্ট রামলালা বিরাজমান বাদী পক্ষ হিসেবে সামনে আসে। অযোধ্যার দেবতা রামের শিশুরূপ রামলালা আইনের চোখে নাবালক। তবে হিন্দু দেবতাকে বাদী পক্ষ হিসেবে তুলে ধরাটা নজিরবিহীন। মনুষ্যরূপী রামের মকদ্দমাকারীদের অন্যতম ছিলেন তৎকালীন ভিএইচপি কার্যকরী প্রেসিডেন্ট দেওকী নন্দন আগরওয়াল। ১৯৮৯ সালে তাঁর হাত ধরেই রামলালার হয়ে মামলা শুরু হয়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অন্যতম নেতা ত্রিলোকীনাথ পাণ্ডে ছিলেন রামলালার পাশে। ২০০২ সালে মামলার দায়িত্ব নেন তিনি।
এদিন শীর্ষ আদালত বলে, ওই স্থানকে যে হিন্দুরা ভগবান রামের জন্মস্থান হিসেবে বিশ্বাস করেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। রাম জন্মভূমিতে যে ১৮৫৭ সালের আগেও হিন্দু পুণ্যার্থীরা যেতেন, তার প্রমাণ মিলেছে। বিতর্কিত জমির বাইরের অংশে যে হিন্দুরাই পূজার্চনা করতেন, সে প্রমাণও খুব স্পষ্ট। কিন্তু সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এই মামলায় এমন কোনও প্রমাণ পেশ করতে পারেনি, যাতে বলা যায়, ১৮৫৭ সালের আগে বিতর্কিত জমির দখল পুরোপুরি তাঁদের হাতে ছিল। বিতর্কিত জমির উপরে রামলালার অধিকার স্বীকার করে নেওয়া আইন-শৃঙ্খলা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার প্রশ্নের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
বিতর্কিত জমি রামলালার। এই ঘোষণার পরই সেলিব্রেশন শুরু করে দেন রামলালা বিরাজমানের পক্ষের আইনজীবীরা। সিনিয়র আইনজীবী পিএস নরসিমা বলেন, “মসজিদ তৈরির আগে হিন্দুরা রাম জন্মভূমিতে প্রার্থনা করতেন। এখনও সেই রীতি চলছে। এটা অত্যন্ত ভাল রায়। এতদিনে ঐতিহাসিক ভুল শোধরানো গেল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.