সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মোদি সুনামিতে কার্যত খড়কুটোর মতো উড়ে গেল রাহুল-অখিলেশ ‘সাথ’৷ ঐতিহাসিক জনরায়ে ফের ১৪ বছর পর উত্তরপ্রদেশের ক্ষমতায় আসীন ভারতীয় জনতা পার্টি৷ শনিবার ভোটের ফল প্রকাশ হতেই এক ঝটকায় বদলে গেল আসমুদ্র হিমাচল ভারতের রাজনৈতিক সমীকরণ৷ নোট বাতিল, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের যাবতীয় তরজায় জল ঢেলে ফের তিন বছর আগের স্লোগানেই মাতায়োরা বারাণসী থেকে দিল্লি– ‘হর হর মোদি, ঘর ঘর মোদি’৷ শুধু টিপুর গড় দখলই নয়, উত্তরাখণ্ডেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়তে চলেছে নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদির বিজেপি৷
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে বিপক্ষকে কার্যত নক-আউট করে দিয়েছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদির যোগ্য নেতৃত্ব ও অমিত শাহের তুখোড় রাজনৈতিক চালে ধরাশায়ী সপা ও কংগ্রেস জোট। কোনও বুথ ফেরৎ সমীক্ষাও আঁচ করতে পারেনি যে উত্তরপ্রদেশে এতগুলি আসন পাবে বিজেপি। এই প্রতিবেদনে রইল সেই ১০ কৌশল, যার সাহায্যে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৩১২টি আসন ছিনিয়ে নিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
১. যাদব নন, অথচ অনগ্রসর শ্রেণির প্রার্থীদের মধ্যে সুষ্ঠু টিকিট বিতরণ। এই ভোটে ১৩০ জনেরও বেশি অ-যাদব প্রার্থীকে টিকিট দেয় বিজেপি।
২. জাতভ নন, এমন দলিতদের টার্গেট করা। পাসিরা ২৫টি, ধোপারা ৯টি মনোনয়ন জমা দেন বিজেপির পক্ষে। মূলত এঁদের কথা মাথায় রেখেই অমিত শাহ একজন কুশওয়াহকে, কেশব মৌর্যকে রাজ্যের পার্টি প্রেসিডেন্ট করার সিদ্ধান্ত নেন।
৩. পিছিয়ে পড়া, অথচ জাতভ নন, এমন ব্যক্তি যেমন, কৃষ্ণা রাজ, নিরঞ্জন জ্যোতি ও আপনা দলের অনুপ্রিয়ার প্যাটেলদের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বে নিয়ে আসা।
৪. অখিলেশ যাদবের দল যে শুধুমাত্র যাদবদের উপরই নির্ভরশীল, মানুষের মনে এমন ধারণা তৈরি করে দেয় বিজেপি নেতৃত্ব। একইভাবে মায়াবতীর বিএসপির ভিত্তি যে শুধুমাত্র জাতভ বা জাটুয়ারা, স্বামী প্রসাদ মৌর্যদের নিশানা করে সেই জনমতও তৈরি করতে সক্ষম হন শাহরা।
Sharing some images of celebration at BJP HQ. Thank you all for your love and support. pic.twitter.com/DsLxHCgXeR
— Amit Shah (@AmitShah) March 11, 2017
৫. সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, নোট বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত যে মোদির মতো একজন বরিষ্ঠ নেতাই নিতে পারেন, তিনি যে আদতে গরিবদের পক্ষে সেই ধারণা মানুষের মনে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন বিজেপির শীর্ষ নেতারা।
৬. উজ্জ্বলা যোজনা, শৌচাগার নির্মাণে ভরতুকি, সস্তায় ইউরিয়া সার বিতরণে গতি এনে মানুষের মন জয় করে নেয় বিজেপি।
৭. জাতপাতের ভিত্তিতে উত্তরপ্রদেশে রাজনীতি আর বরদাস্ত করা হবে না, বিজেপির এই প্রচার মানুষের মনে গভীর প্রভাব ফেলে, বিশেষত শিক্ষিত যুবকদের মনে।
৮. হিন্দুত্ববাদী তাস, অযোধ্যায় রামমন্দিরের আশ্বাস বিজেপিকে বাড়তি মাইলেজ দেয় ভোটে।
LIVE: Press Conference by Shri @AmitShah. #ElectionResults2017 https://t.co/IDBijYanVB
— BJP (@BJP4India) March 11, 2017
৯. মুসলিমদের কোনও টিকিট না দিয়ে দলের হিন্দু ঘেঁষা চরিত্রকে আরও স্পষ্ট করে তোলা।
১০. অখিলেশ বা মায়াবতীর মতো কোনও মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ছিল না বিজেপির। কারণ, বিজেপি নেতারা জানতেন, ভোটের আগে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তুলে ধরলে দলের মধ্যে কোন্দল বেধে যেতে পারত। তাই মোদিকেই বিজেপির মুখ হিসাবে তুলে ধরা হয়। মোদির প্রভাবেই অন্তত ৫০টি আসনে দুর্বল প্রার্থী সত্ত্বেও জিতে গিয়েছে বিজেপি, মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.