Advertisement
Advertisement

Breaking News

BJP

অসমের হত্যাকাণ্ডে অসহায় পরিবার, ত্রাতা হয়ে দাঁড়ালেন বিজেপি বিধায়ক

তারা জানে না তাদের অপরাধ কী!

Assam murder: BJP MLA Biswajit Phukan turns saviour for family | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:July 26, 2023 8:23 pm
  • Updated:July 26, 2023 8:48 pm  

মণিশংকর চৌধুরী: তারা জানে না তাদের অপরাধ কী! জানে না কেন এই পৃথিবীতে আচমকাই একেবারে একলা হয়ে যেতে হল তাদের। অসমের গোলাঘাট জেলায় সংঘঠিত  ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে পরিবারের প্রায় সকলকে হারিয়ে অথৈ জলে পড়েছেন অঙ্কিতা ঘোষ ও তাঁর দিদির ৯ মাসের সন্তান।এহেন পরিস্থিতিতে অঙ্কিতার পাশে দাঁড়ালেন অসমের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ ফুকন। মাতৃহারা শিশুটি আপাতত রয়েছে চাইল্ড কেয়ারে।          

প্রেম, প্রতিহিংসা, লাভ জেহাদ এবং ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড! ন-মাসের এক শিশুর উপর এহেন ঘটনাপ্রবাহই নামিয়ে এনেছে আচমকা বিপর্যয়। অসমের এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের কথা যত প্রকাশ্যে এসেছে, তত শিউরে উঠেছে সারা দেশ। লকডাউনে যে প্রেমের সম্পর্কের জন্ম, তা যে শিশুটির জীবনে এমন অন্ধকার নামিয়ে আনবে কে জানত! নাজিবুর রহমান বোরার প্রেমে পড়েছিলেন সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ। আলাপের সূত্রপাত ফেসবুকে। দিনকয়েক কথাবার্তার পরই প্রেম গাঢ় হয়। ঘর ছেড়ে নাজিবুরের সঙ্গে কলকাতায় চলে আসেন সঙ্ঘমিত্রা। সেই সময় তাঁদের বিয়ে হয়। এদিকে এরপরেই মেয়েকে ফেরাতে উদ্যোগী হয়ে ওঠেন সঙ্ঘমিত্রার মা-বাবা। তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হন। আইনের পথ ধরেই এগোন পুলিশকর্মীরা। গ্রেপ্তার করা হয় সঙ্ঘমিত্রাকে, মাসখানেক বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকেন সঙ্ঘমিত্রা। যদিও এরপরেও প্রেমে ভাটা পড়েনি। জামিনের পর ফের সকলের চোখে ধুলো দিয়ে পালান নাজিবুর আর সঙঘমিত্রা, এবার চেন্নাইয়ে। সেখানে গিয়ে ঘর পাতেন তাঁরা। এই পর্বেই অন্তঃসত্ত্বা হন সঙ্ঘমিত্রা। গত নভেম্বরে যখন শিশুটির জন্ম হয়, তখন অবশ্য অসমের গোলাঘাটে ফিরে এসেছেন তাঁরা। কিন্তু এর পর থেকেই ক্রমে দুজনের সম্পর্কে চিড় ধরতে শুরু করে। একদিন নাজিবুরের ঘর ছেড়ে মা-বাবার কাছে ফিরে যান সঙ্ঘমিত্রা। অভিযোগ, স্বামী তাঁর উপর অকথ্য অত্যাচার করতেন। পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। গ্রেপ্তার হন নাজিবুর। কিছুদিন পর জামিন মিললে নিজের সন্তানকে দেখতে চান নাজিবুর। এদিকে তাঁকে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দিতে নারাজ ছিলেন সঙ্ঘমিত্রার মা-বাবা। এই দ্বন্দ্বই চরমে ওঠে। যা পরিণতি পায় ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে। সঙ্ঘমিত্রা, তাঁর মা ও বাবাকে খুন করেন নাজিবুর। পরে সন্তানকে নিয়ে আত্মসমর্পণ করেন নাজিবুর।

Advertisement

ঘটনায় ইতিমধ্যেই পড়েছে লাভ জিহাদের ছায়া। হিন্দু মেয়েদের ধর্মান্তর করার একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরেই অসমে সক্রিয় বলে অভিযোগ তুলেছে ‘সারা অসম বাঙালি যুবছাত্র ফেডারেশন’। এই ঘটনাও তার ব্যতিক্রম নয় বলেই অনেকে মনে করছেন। নাম-পরিচয় ভাঁড়িয়েই সঙ্ঘমিত্রার সঙ্গে প্রেম ও বিয়ে করেছেন নাজিবুর, এমনটাই ক্রমে প্রকাশ পাচ্ছে। এমনকি এই চক্রের পিছনে শত্রুরাষ্ট্রের মদত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। লাভ জিহাদ নিয়ে সারা দেশেই উদ্বেগ ক্রমে বাড়ছে। কোনও কোনও রাজ্য এ ব্যাপারে আইন প্রণয়নেও উদ্যোগী হয়েছে। বর্তমানে সম্প্রদায়গত বিদ্বেষের আবহে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে ধর্মান্তরের ঘটনা নতুন কিছু নয়। অনেকেই সাফ জানাচ্ছেন, অসমের এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যেও রয়েছে সেই লাভ জেহাদই।

[আরও পড়ুন: ভেঙে পড়তে পারে মসজিদ! মুসলিম পক্ষের আরজিতে জ্ঞানবাপীর ASI সমীক্ষা স্থগিত করল আদালত]

এই প্রসঙ্গে অসমের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ ফুকন বলেন, “এটা লাভ জেহাদের ঘটনা। লকডাউনের সময় ওই মহিলাকে ভুল পরিচয় দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই যুবক। পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে একজন কাজির মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। তবে সেই বিয়ে অসিদ্ধ। কারণ, মেয়েটি হিন্দু। স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্টে তাঁদের বিয়ে হয়নি। স্ত্রীকে মাদকাসক্ত করেছিল অভিযুক্ত। এনিয়ে আমাদের সরকার কড়া পদক্ষেপ করছে। এই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি। অঙ্কিতার সমস্ত দায় বহন করব আমি।”

কাজিরাঙা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ছে অঙ্কিতা। নৃশংস ঘটনায় মা, বাবা, দিদিকে হারিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন তিনি। একইসঙ্গে পৃথিবীর আলো-অন্ধকার ঠিক করে বুঝে ওঠার আগেই সম্প্রদায়গত বিদ্বেষের অন্ধকার সঙ্ঘমিত্রার সন্তানকে গ্রাস করেছে। সে সত্যিই দুই নরনারীর ভালবাসার সন্তান নাকি লাভ জিহাদের পরিণতি- তা বুঝে ওঠা দায়! কিন্তু জীবন শুরুর মুহূর্তেই জীবনের এই পরিণতি তার প্রাপ্য কি-না, সে উত্তর মেলে না। এরপর আইন আইনের পথে চলবে। লাভ জিহাদ, নাকি এ নিছকই প্রতিহিংসার কারণে ঘটা হত্যাকাণ্ড- তা তো ঠিক করবে আদালত। তবে তার আগেই শিশুটি হারিয়ে ফেলল তার মায়ের স্নেহছায়া। এমনকী নিকট আত্মীয়-পরিজনদেরও। ‘বাবা’ শব্দের অর্থও হয়তো কোনদিনই বোধগম্য হবে না তার কাছে। আর ঠিক সেই পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসেছেন বিজেপি বিধায়ক। রাজনীতির বাইরেও মানবিকতার এক প্রসারিত জায়গা থাকে। বিদ্বেষের গ্লানি, রাজনীতির চোরাগলি পেরিয়ে সেই পরিসরটিতেই যেন আলো পড়ল বিজেপি বিধায়কের পদক্ষেপে।

[আরও পড়ুন: কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে ১০ সেকেন্ডের জন্য বন্ধ বিজয়নের মাইক! ‘ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে তদন্তে পুলিশ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement