সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইতিহাসে প্রথমবার। করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় অসমের কামাখ্যায় বন্ধ হয়ে গেল কামাখ্যা মন্দিরের পরম্পরা। বছরের পর বছর ধরে অসমে এই ‘অম্বুবাচী মেলা’-র আয়োজন হয়ে আসছে। জুন মাসে এই উৎসব হওয়ার কথা থাকলেও এখন থেকেই তা বাতিল করার ঘোষণা করা হয়। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুন্যার্থী, ভক্তরা এই মেলায় অংশগ্রহণ করতে আসেন।
অসমের কামাখ্যায় জুনে ‘অম্বুবাচী মেলা’-র আয়োজন করা হয়। ‘মা কামাখ্যা দেবালয়’ কর্তৃপক্ষ এই মেলার আয়োজন করে থাকে। সংস্থার তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সংক্রমণের আশঙ্কায় এই বছরে কামাখ্যায় মহোৎসব হবে না। কোনও তীর্থ যাত্রী, সাধু-সন্ন্যাসীরা যাতে সেই উৎসবের জন্য কামাখ্যায় না যান তার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকে প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, দেশজুড়ে কোভিড-১৯ (COVID-19) মহামারী বড় আকার নেওয়ায় এবার মহোৎসবের কোনও ব্যবস্থাই করা হবে না।
কামাখ্যা মন্দিরের পুরোহিত মোহিত শর্মা জানান, “এটাই প্রথমবার যখন ভক্তদের আসতে বারণ করা হচ্ছে। ১৯৮০ সালেও এরকম একটি পরিস্থিতি হয় তবে ভক্তদের খুব বেশি না হলেও এভাবে আসতে নিষেধ করা হয়নি।” কামাখ্যায় অম্বুবাচী মেলা হিন্দু ধর্মের একটি বাৎসরিক উৎসব। ধর্মীয় মতে, আষাঢ় মাসের এই সময়ে পৃথিবী বা ধরিত্রী মা ঋতুমতী হন। এই সময়টিতে অম্বুবাচী পালন করা হয় দেশের সর্বত্রই। অম্বুবাচী দিন থেকে পরর্বতী তিন দিন পর্যন্ত কামাখ্য দেবীর মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে। তবে কামাখ্যা মন্দির চত্বরে বিশাল উৎসব হয়। গোটা দেশ থেকে প্রচুর ভক্তরা উপস্থিত হন কামাখ্যায়। গড়ে তাদের সংখ্যা প্রয় ২৫ লক্ষ। আসেন অগণিত সাধু, সন্ন্যাসীও। পঞ্জিকা অনুসারে এই বছরে অম্বুবাচি পড়েছে ২২ জুন থেকে ২৬ জুন। কিন্তু সেই উৎসব এবার স্থগিত থাকবে।
সনাতন ধর্ম মতে, অম্বুবাচীর সময়ে হিন্দুরা কোনও ধরনের মাঙ্গলিক কাজ করে না। তিন দিন পর চতুর্থ দিন থেকে মঙ্গলিক কাজে করা যেতে পারে। এই সময়ে জমিতে হাল ধরা, গৃহপ্রবেশ, বিবাহ ইত্যাদি শুভ কাজ করা হয় না। দেশের প্রায় সর্বত্রই বিভিন্ন দেবী মন্দিরের প্রবেশদ্বার বন্ধ থাকে। ঢেকে দেওয়া হয় সমস্ত দেবীমূর্তির মুখ। সেই সময় কোনও হিন্দু দেবীদের পুজোও করা হয় না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.