সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বিজেপির অন্দরে ভাঙন। বিতর্কিত বিলটির বিরোধিতায় উত্তাল অসম-সহ উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্য। এমনই পরিস্থিতিতে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অসমের বিজেপি মুখপাত্র মেহদি আলম বরা।
পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে তিনি বলেন, “জাতির থেকে দল বড় নয়। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হলে অসমে ভূমিপুত্রদের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।” এদিকে দলের অন্দরে ক্ষোভ প্রশমিত করতে বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল, হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও শীর্ষ নেতারা। উল্লেখ্য, বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় আগেই রাজ্যের বিজেপি সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছে অসম গণ পরিষদ। উল্লেখ্য, বিরোধীদের তুমুল আপত্তি খারিজ করে মঙ্গলবার লোকসভায় ধ্বনি ভোটে পাস হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এই তিন দেশ থেকে আগত অ-মুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান সংক্রান্ত বিলটি নিয়ে তিন ঘন্টা আলোচনা হয়। পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের জবাবি ভাষণের পরে পাশ হয়। যদিও বুধবার, বিলটি পাস করানোর জন্য রাজ্যসভায় আনা হলে বিরোধীদের চাপে তা থমকে যায়।
নাগরিকত্ব বিল নিয়ে অসমে দিন কয়েক আগে থেকেই প্রতিবাদ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত শুক্রবার শিলচরে গিয়ে বলেছিলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল খুব শীঘ্রই পাস করানো হবে। তাঁর ওই ঘোষণার থেকেই সেখানে আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। বেশ কিছু সংগঠন ধর্মঘটও ডাকে। বন্ধ সর্বাত্মক হয়। উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্যে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হয়। রাজনাথ সিং অবশ্য বলেন, বিলটির কারণে অসমের ক্ষতি হবে না এবং এনআরসি (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) তে কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে, তাতে বিরোধীরা তো বটেই বিজেপির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জোট শরিকরাও সন্তুষ্ট হননি।
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (২০১৬) আইনে পরিণত হলে বদলে যাবে ১৯৫৫ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন। সে ক্ষেত্রে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে প্রতিবেশী দেশগুলিতে ধর্মীয় হিংসার শিকার হয়ে কেউ ভারতে পালিয়ে এলে আশ্রয় দেবে ভারত সরকার। মিলবে ভারতের নাগরিকত্বও। যদিও এই সুবিধা পাবেন শুধু মাত্র পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে ভারতে পালিয়ে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ এবং পার্সি ধর্মের মানুষেরা। বিজেপি ছাড়া অসমের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, এই বিল পাস হওয়ার ফলে বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ পার্শ্ববর্তী অসম-সহ গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে আশ্রয় নেবেন। এই বিল ১৯৮৫ সালের অসম চুক্তির বিরোধী। অসমের বিভিন্ন জনগোষ্ঠী বহিরাগতদের নিজস্ব এলাকায় আশ্রয় দিতে বরাবরই নিজেদের বিরোধিতার কথা বলেছে প্রকাশ্যেই।
[রাজ্যসভায় পাস উচ্চবর্ণের সংরক্ষণ বিল, সমর্থন বিরোধীদেরও]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.