সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পারিবারিক হিংসা, বা বধূ নির্যাতনের আওতায় ঠিক কী কী পড়ে তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে বিভিন্ন সময়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে প্রকৃত নিপীড়িতরা সুবিচার পায়নি, আবার অনেক ক্ষেত্রে ভুয়ো বধূ নির্যাতনের মামলাও দেখা গিয়েছে বিস্তর। এই পরিস্থিতিতে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ একটি মন্তব্য করল বম্বে হাই কোর্ট। বম্বে হাই কোর্টের তরফে বলা হল, নিজের স্ত্রীকে ভাল রান্না করতে বলা বা ভাল করে বাড়ির কাজ করতে বলা মানসিক নির্যাতনের উপর পড়ে না।
বিচারপতি সারঙ্গ কোতওয়াল একথা বলেন ১৭ বছরের পুরনো একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে। বছর ১৭ আগে এক মহিলার আত্মহত্যার পিছনে তাঁর স্বামী এবং পরিবারের মানসিক নির্যাতনকে দায়ী করে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলায় অভিযুক্ত বিজয় শিণ্ডেকে বেকসুর খালাস দিয়ে দিল আদালত। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিল স্ত্রীকে ঠিকমতো বাড়ির কাজ করতে বলা বা ভাল রান্না করতে বলা অপরাধ নয়। ১৯৯৮ সালে বিয়ে হয়েছিল বিজয় শিণ্ডের। অভিযোগ ছিল, বিজয় স্ত্রীকে রান্না ও বাড়ির কাজ ঠিক মতো না-করার জন্য বকাঝকা করতেন। বিজয়ের সঙ্গে গলা মেলাতেন তাঁর মা-বাবাও। বিয়ের তিন বছর পরে পারিবারিক অশান্তির জেরে আত্মহত্যা করেন বিজয়ের স্ত্রী। বিজয়ের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে বকাঝকা করা এবং মানসিক নির্যাতন করে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন মৃতার পরিবারের লোকেরা।
সোমবার বিচারপতি কোতওয়াল জানান, সরকারি পক্ষের আইনজীবী এমন কোনও প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি, যার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে মহিলার উপরে মানসিক নির্যাতন চালানো হত। বিচারপতির কথায়, ‘‘শুধু ভাল করে রান্না বা ঠিকমতো বাড়ির কাজ করতে বলার মানে এই নয় যে, মৃতার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হত। বিচারপতি আরও মন্তব্য করেন যে, ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’ প্রমাণ করার জন্য মৃতার আত্মীয় ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত ছিল। তাও এ ক্ষেত্রে করা হয়নি। বিচারপতির কথায়, “প্রমাণ ছাড়া এই ধরনের অভিযোগ শুধু সন্দেহের পর্যায়েই থাকে। এর ভিত্তিতে কোনও অভিযুক্তকেই দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.