সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে স্বস্তি। এক মাসের রুদ্ধশ্বাস নাটকের পর শুক্রবার রাজস্থানে (Rajasthan) আস্থাভোট জয় পেল অশোক গেহলটের (Ashok Gehlot) নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার। এদিন অধিবেশনের বিতর্ক চলাকালীন বিজেপির তুরুপের তাস শচীন পাইলটও (Sachin Pilot) গেরুয়া শিবিরকে একহাত নেন। পাইলট-সহ ১৮ বিধায়ক গেহলটের সঙ্গে দেখা করার পরই রাজস্থানের রাজনৈতিক অঙ্কটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। উপরন্তু বিএসপি বিধায়করাও দলের প্রধান মায়াবতীর কথা অমান্য করে কংগ্রেসের পাশেই যে থাকবে, তাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেই চেনা চিত্রনাট্য ধরেই শুক্রবার রাজস্থানের রাজনৈতিক নাটকের যবনিকাপাত হল।
করোনা কাঁটায় জেরবার রাজস্থান। ঠিক তখনই বিজেপি মরুরাজ্যে সরকার ফেলার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। আর সেই সময় সামনে আসে কংগ্রেসের নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব। ১৮ বিধায়ককে নিয়ে সটান দিল্লি চলে যান উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট। এরপর যমুনা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত দুপক্ষের সম্পর্কের বরফ গলেছে। বৃহস্পতিবার রাতে গেহলট ও পাইলট একসঙ্গে বৈঠকও সেরেছেন। আর পাইলটের ঘর ওয়াপসির দিনই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা ঘোষণা করে বিজেপি। তবে তাঁরাও জানত লাভ কিছুই হবে না। আস্থা ভোট জিততে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি বিধায়ক কংগ্রেসের হাতে রয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০০ আসনের বিধানসভা আস্থাভোট জিততে প্রয়োজন ১০১ জন। এদিকে পাইলট-সহ বিদ্রোহী কংগ্রেস বধায়করা ঘরে পিরতে গেহলটের কাছে বিধায়ক সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১২০ জন। এদিকে আবার ৬ বিএসপি বিধায়কও তাঁদের সমর্থন করেছেন।
অধিবেশনের শুরু থেকেই উত্তপ্ত ছিল রাজস্থান বিধানসভা। স্লোগান, কাগজ ছোড়াছুড়ি, নিরাপত্তারক্ষীদের দিকে তেড়ে যাওয়া— কিছুই বাদ পড়েনি! তারই মধ্যে আস্থাভোটে জিতে জয়পুরের কুরসি নিশ্চিত করলেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। এই জয়ের পরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা আজ ঐক্যবদ্ধ ভাবে বিজেপির চক্রান্ত ভেস্তে দিয়েছি।” অধিবেশনের শুরুতে আস্থাভোটের সিদ্ধান্ত নেন রাজস্থান বিধানসভার স্পিকার জোশী। গোপন ব্যালটে ভোটাভুটির জন্য বিজেপি বিধায়কদের হট্টগোলের মধ্যেই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে অধিবেশন দুপুর ১টা পর্যন্ত মুলতুবি করে দেন তিনি।বিরতির পরে অধিবেশন শুরু হলে স্পিকারের নির্দেশে গেহলটের মন্ত্রিসভার তরফে আস্থা প্রস্থাব পেশ করেন মন্ত্রী শান্তি ধারিওয়াল। আস্থা বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘মহারানা প্রতাপ বহিরাগত হামলাকারীকে প্রতিরোধ করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট একই ভাবে বহিরাগত চক্রান্তকারীকে রুখে রাজস্থানকে রক্ষা করলেন।’’
প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সচিন অবশ্য আজ বিধানসভার সামনের সারিতে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে বসেননি। দ্বিতীয় সারিতে বিজেপি বিধায়কদের আসন লাগোয়া এক নির্দল বিধায়কের পাশে চেয়ারে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এ প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়কদের কটাক্ষের জবাবে শচিন বলেন, “শক্তিশালী সেনাদেরই সব সময় সীমান্তে পাঠানো হয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.