সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত দু’দিনে আচমকাই কংগ্রেসের তথাকথিত নিরাপদ আস্তানা রাজস্থানে অভূতপূর্ব সংকট তৈরি হয়েছে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্বেও মরুরাজ্যে কংগ্রেসের সরকার টিকে থাকা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন উঠে গিয়েছে। কিন্তু কেন এই আচমকা সংকট? কেনই বা শচীন পাইলটের মতো সর্বভারতীয় মুখকে সদলবলে সোনিয়ার দ্বারস্থ হতে হচ্ছে? এর নেপথ্যে কি বিজেপি? নাকি কংগ্রেসেরই গোষ্ঠী কোন্দল? এমন হাজারো প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে রাজনৈতিক মহলে।
আসলে রাজস্থানের কংগ্রেস সরকারের গোঁড়াতেই ছিল গলদ। শচীন পাইলট (Sachin Pilot) পাঁচবছর বিজেপির বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করে দলকে তৈরি করলেন। কিন্তু ভোটে জয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী করা হল অশোক গেহলটকে (Ashok Gehlot) । কারণ, অধিকাংশ বিধায়ক তাঁরই সমর্থক। পাইলটকে তখন উপমুখ্যমন্ত্রী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ দিয়ে সন্তুষ্ট রাখা হয়। পুরোপুরি সন্তুষ্ট না হলেও সেসময় সেই ‘চুক্তি’ মেনে নেন তরুণ নেতা। কিন্তু এখন নাকি তাঁকে কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতির পদ থেকেও সরাতে চাইছেন গেহলট। তিনি চাইছেন, নিজের পছন্দের কাউকে ওই পদে বসাতে। পাইলট ঘনিষ্ঠ নেতারা সেটাই দাবি করছেন। আর সেজন্যই যত গোলযোগ।
পাইলট ঘনিষ্ঠরা বলছেন, বিজেপির প্রলোভনে বা দলত্যাগের লক্ষ্যে তিনি দিল্লিতে যাননি। তিনি দিল্লিতে গিয়েছেন শুধু হাইকম্যান্ডের কাছে নিজের শক্তি প্রদর্শন করতে। দলকে বুঝিয়ে দিতে, যে তাঁকে গুরুত্ব না দিলে আগামী দিনে ভুগতে হতে পারে। আসলে আসন্ন সাংবিধানিক নির্বাচনের আগে প্রদেশ সভাপতির পদটি ধরে রাখাই পাইলটের লক্ষ্য। অন্যদিকে গেহলট সেটিও হতে দিতে চান না।
এখন প্রশ্ন হল, এর নেপথ্যে কি বিজেপির হাত আছে? পাইলট কি বিজেপি শিবিরে ঝুঁকতে পারেন? রাজস্থানের সরকার কি পড়ে যেতে পারে? ওয়াকিবহাল মহলের মতে কোনটিই এখন হওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এই মুহূর্তে রাজস্থান সরকার অত্যন্ত সুবিধাজনক জায়গায় আছে। ২০০ আসনের মধ্যে ১২৪ জন বিধায়ক গেহলট সরকারকে সমর্থন করছে। এর মধ্যে কংগ্রেসের ১০৭, বিটিপির ২, সিপিএমের ২, আরএলডির ১ এবং ১২ জন নির্দল বিধায়ক আছেন। সরকার ফেলতে হলে পাইলট শিবিরকে অন্তত ৫০ জন বিধায়ক ভাঙাতে হবে। তবেই সংখ্যালঘু হতে পারে গেহলট সরকার। এই মুহূর্তে এত বিধায়কের সমর্থক পাইলটের কাছেও নেই। তাছাড়া বিজেপিতে গেলেও তিনি মুখ্যমন্ত্রিত্ব পাবেন না। তাই তাঁর এখনই বিজেপিতে যাওয়ার সম্ভাবনা একপ্রকার নেই। আপাতত তিনি শুধু প্রদেশ সভাপতির পদটি সুরক্ষিত রাখতেই এতো গোল বাঁধাচ্ছেন।যদিও রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে সমীকরণ যে কোনও সময় বদলাতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.