সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে বাড়তি নজর। প্রায় নজিরবিহীনভাবে উত্তরপূর্বাঞ্চল থেকে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে স্থানান্তরিত হচ্ছে ভারতীয় সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সদর দপ্তর। শিমলা থেকে আম্বালায় উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রায় ১২ লক্ষ প্রশিক্ষণরত সেনাকে।এটি দেশের সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে সেনাবাহিনী।
দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চল সীমান্তের মধ্যে একমাত্র চিন ভারতীয় সেনাবাহিনীর মাথাব্যথার কারণ। ছিন-ভুটান-ভারতের ত্রিদেশীয় সীমান্ত ডোকলাম উপত্যকায় চিন সেনার অবাধ গতিবিধি বছর দুই আগে উদ্বেগে ফেলেছিল সেনাবাহিনীকে। ডোকলাম ঘিরে নতুন করে উসকে উঠেছিল ভারত-চিন যুদ্ধের আশঙ্কা। দু’দেশই নিজেদের কূটনৈতিক চালে সেনাদের প্রতিহত করে রেখেছিল। শেষপর্যন্ত অবশ্য ভারতীয় সেনার সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধে পিছু হঠে চিন সেনা। তবে ডোকলাম ছাড়াও তিব্বত সীমান্তে সেনাদের আনাগোনা চলছে। এই পরিস্থিতিতে সীমান্ত সুরক্ষায় বাড়তি জোর দিতে ইন্দো-টিবেটান-বর্ডার-পুলিশ বা আইটিবিপির ঘাঁটি চণ্ডীগড় থেকে জম্মু-কাশ্মীরের লেহ-তে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। উত্তরপূর্ব সীমান্তের ভার আপাতত আইটিবিপির ওপর দিয়ে সদ্য প্রশিক্ষিত সেনাদের কাঁধে দেওয়া হচ্ছে উত্তর পশ্চিম অর্থাৎ পাকিস্তান সীমান্তের সুরক্ষার ভার। তাই শিমলা থেকে সদর দপ্তরটি হরিয়ানার আম্বালায় উড়িয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত। তাঁর প্রস্তাব পেশ হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে।
[মালিয়ার সম্পত্তি ব্যাংক কনসর্টিয়ামকে দিলে আপত্তি নেই ইডি-র]
সেনা সূত্রে খবর, ১৯৯০ সাল থেকে আর্মি ট্রেনিং কমান্ডের সদর দপ্তর রয়েছে শিমলায়। এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েন জওয়ানদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখা প্রশিক্ষণরত সেনাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে শুরু থেকে তাঁদের যুদ্ধক্ষেত্রের ধারণা তৈরি হয়। শুধু শিমলা এবং তার সংলগ্ন অঞ্চলের সেনাবাহিনীর মধ্যে সমন্বয় রাখলেই চলবে না, দেশের বিভিন্ন সীমান্তের বাস্তব ছবিটা বুঝতে হবে।’ আগামী ৬ মাসের মধ্যে শিমলা থেকে আম্বালায় চলে যাচ্ছেন অন্তত ১২ লক্ষ প্রশিক্ষণরত সেনা এবং ১৫০ জন আধিকারিক। এছাড়া শিমলা থেকে আম্বালায় আর্মি ট্রেনিং সেন্টার উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার আরও কয়েকটি কারণ রয়েছে। পাক সীমান্তের খুব কাছে পাঠানকোটে রয়েছে বাযুসেনার ঘাঁটি। এছাড়া অস্ত্র কারখানা। ফলে পাক সীমান্তে কোনও উত্তেজনা তৈরি হলে, সেনাবাহিনীর হাতের কাছে মজুত থাকবে যুদ্ধে নামার সমস্ত উপকরণ। যার সাহায্যে একেবারে সামনের সারিতে থেকে লড়াই করার সাহস পাবেন সদ্য প্রশিক্ষিত সেনারাও। তাছাড়া ডিরেক্টরেট অফ মিলিটারি ট্রেনিংয়ের সঙ্গে আর্মি ট্রেনিং সেন্টারকে মিলিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দিল্লিতে এই বিভাগের সদর দপ্তরটিও সরে যাচ্ছে আম্বালায়।স্থানান্তরিত হতে পারে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ডিরেক্টরেটও। সবমিলিয়ে, দেশের সুরক্ষা বজায় রাখতে সম্ভাব্য সবরকম প্রস্তুতির পথ খোলা রেখে বিপিন রাওয়াতের এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে সেনাবাহিনীর একাংশ। এখন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং সরকারি শিলমোহরের অপেক্ষায়। তারপরই বাস্তবায়িত হবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থানান্তর পর্ব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.