সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলির নেতৃত্বে ভারতীয় সেনা এখন আগের চেয়ে ঢের বেশি শক্তিশালী, বলছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। একদিকে সিকিমের কাছে চিনা সেনার আগ্রাসন ও অন্যদিকে কাশ্মীরে পাক জঙ্গিদের লাগাতার অনুপ্রবেশের চেষ্টা বারবার ব্যর্থ করে দিচ্ছেন দেশের জওয়ানরা। আর এবার নিয়ন্ত্রণরেখাকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলতে কাশ্মীরে কয়েকশো ‘রোবট’ মোতায়েন করছে ভারতীয় সেনা।
সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত এই ‘রোবট আর্মি’ তৈরি করেছে ডিআরডিও। ‘জি নিউজ’-এর খবর মোতাবেক, সীমান্তে কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতি তৈরি হলে এই রোবটদের নামানো হবে। আপাতত এরকম ৫৪৪টি রোবটকে ছাড়পত্র দিচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। পরে প্রয়োজন পড়লে আরও রোবট তৈরির বরাত দেওয়া হবে। কাশ্মীর সীমান্তে উঁচু পাহাড়ি অঞ্চলে বা গভীর জঙ্গলে মোতায়েন করা হবে এই ‘রোবট আর্মি’কে। সাধারণত, কোনও সভ্য, আধুনিক দেশে বোমা নিষ্ক্রিয় করতে বা বিস্ফোরক খুঁজতে যন্ত্রের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। কিন্তু ভারতে মানবসম্পদের উপরেই নিরাপত্তার পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব ছিল এতদিন। এবার সেই ছবি খানিকটা হলেও পালটাতে চলেছে। কিন্তু আচমকা কেন রোবট মোতায়েন করতে হচ্ছে সীমান্তে? তবে কি চিন ও পাকিস্তানের দিকে নজর রেখেই এই সিদ্ধান্ত?
সেনা সূত্রে খবর, সীমান্তের মতো স্পর্শকাতর এলাকায় শুধুই মানুষের উপর প্রহরার দায়িত্ব থাকলে এযুগে নিশ্চিন্তে থাকা যায় না। কারণ, রাতের অন্ধকারে বা জওয়ানরা কখনও অসুস্থ বোধ করলে সেই সুযোগে জঙ্গিরা অনুপ্রবেশ করতে পারে। মানুষের নজর এড়িয়ে ঢুকে পড়তে পারে শত্রুপক্ষের ড্রোন। সেক্ষেত্রে মানুষের সঙ্গে রোবটও প্রহরার কাজে নিযুক্ত থাকলে সীমান্তকে নিশ্ছিদ্র রাখা যাবে। কাশ্মীরে সেনাকে লক্ষ্য করে জঙ্গিদের প্রতি সহানুভূতিশীল ব্যক্তিরা পাথর ছুড়লে এই রোবটরা বাধা দেবে। আমেরিকা বা ফ্রান্সের মতো দেশে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজের জন্য রোবটের ব্যবহার রয়েছে। যুদ্ধে কোনও জওয়ান আহত হয়ে পড়লে তাঁকে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে উদ্ধার করে আনতেও রোবটের ব্যবহার রয়েছে। হলিউডের জনপ্রিয় ‘রোবোকপ’ সিনেমার রোবটটির আদলেই অনেকটা দেখতে ভারতের নয়া ‘রোবট আর্মি’র সদস্যদের। ওজনে হালকা, গায়ে সর্বক্ষণ চালু থাকবে নজরদারির জন্য ক্যামেরা। আশেপাশের ২০০ মিটার পর্যন্ত রেঞ্জ এই ক্যামেরার।
প্রথমে শুধুই নজরদারির কাজে নিয়োগ করা হলেও পরে ওই রোবটের হাতে তুলে দেওয়া হবে অস্ত্রও। সেক্ষেত্রে গ্রেনেড ও স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র-সহ মোতায়েন করা হতে পারে ওই রোবটদের। ২০১৬-য় এই প্রকল্পকে ছাড়পত্র দেয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। বর্তমানে মাটির নিচে লুকানো বোমা খুঁজতে মাওবাদী অধ্যুষিত ও সীমান্ত এলাকায় ‘দক্ষ’ নামে ব্যাটারি চালিত রিমোট কন্ট্রোল যান ব্যবহার করা ভারতীয় সেনা। এটিও ডিআরডিও-র তৈরি। ২০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত ওজন বহন করতে পারে ‘দক্ষ’। চড়তে পারে সিঁড়িতে। এর রেঞ্জ ৫০০ মিটারের আশেপাশে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.