সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্প্রতি ভারতীয় বায়ুসেনার এক গ্রুপ ক্যাপ্টেনকে পাকিস্তানে তথ্য পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে পাক গুপ্তচর সংস্থা দুই সুন্দরী মহিলাকে নিয়োগ করে। কিন্তু এই প্রবণতার শিকড় যে অনেক গভীরে, সে কথা ফের একবার প্রমাণিত হল বুধবার। মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুর থেকে এদিন সেনার এক উচ্চপদস্থ অফিসারকেও ওই একই অভিযোগে আটক করা হয়েছে। তাঁকেও হানিট্র্যাপে ফাঁসানো হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। তাঁকে আটক করেছে সেনার ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।
সেনা সূত্রের খবর, আটক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জব্বলপুর ওয়ার্কশপে কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকেই তাকে আটক করা হয়। ওই অফিসারের বাসভবনে হানা দেন গোয়েন্দারা। সেখান থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়। কোথা থেকে ওই অফিসার এত টাকা পেলেন, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি অভিযুক্ত। মনে করা হচ্ছে, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এক্ষেত্রেও সুন্দরী মহিলা ও মোটা টাকার লোভ দেখিয়ে ওই অফিসারকে হাত করে। আটক অভিযুক্তকে আর্মি সেন্ট্রাল কমান্ড হেড কোয়ার্টারে এনে বেশ খানিকক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে নিয়ে যাওয়া লখনউতে। তাঁর অফিস থেকে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, এক্ষেত্রেও পাক সুন্দরীদের সঙ্গলাভের নেশা ছাড়তে পারেননি অভিযুক্ত। ওই নেশাই তাঁর ‘কাল’ হল।
Madhya Pradesh: Army officer of Lt Colonel rank detained in Jabalpur over a honey trap case. Officer is working in the Jabalpur workshop & has been detained by the counter intelligence wing of the Army. pic.twitter.com/EjhxX545qI
— ANI (@ANI) February 14, 2018
এই ঘটনার মাত্র কয়েকদিন আগেই দিল্লি পুলিশ গ্রুপ ক্যাপ্টেন অরুণ মারওয়াহাকে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। সেনার বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি পাকিস্তানকে পাচার করত ২১ বছরের ধৃত বায়ুসেনার গ্রপ ক্যাপ্টেন। তদন্তকারী অফিসাররা জানান, তাকেও ওই একই কায়দায় সুন্দরী মহিলাদের সঙ্গে সেক্স চ্যাট, নগ্ন ছবি পাঠানোর লোভ দেখিয়ে পাকিস্তানের হয়ে চরবৃত্তিতে নিয়োগ করা হয়। যাকে পোশাকি ভাষায় বলে ‘হানি ট্র্যাপ’। যে মহিলাকে ব্যবহার করে এই গোটা পরিকল্পনার ছক কষা হয়, এখন তাকেও খুঁজছে বায়ুসেনার ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। অভিযুক্ত নিজের দোষ কবুল করলে তাকে দিল্লি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বায়ুসেনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় নথির ছবি মোবাইলে তুলে ধৃত গ্রপ ক্যাপ্টেন পাঠিয়ে দিত ইসলামাবাদে। দীর্ঘদিন বায়ুসেনায় কর্মরত থাকায় সে জানত, যে কোন কোন ফাইলে নথিবদ্ধ রয়েছে সেনার যুদ্ধকালীন কলাকৌশল, সামরিক ঘাঁটির অবস্থান ও গোলাবারুদের ভান্ডারের হাল হকিকত। বায়ুসেনার সদর দপ্তরে নিজের আইডি কার্ড ব্যবহার করে ঢুকে পড়ে ফোনে তুলে রাখত সেই সব নথির ছবি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিত পাক গুপ্তচরদের কাছে। বায়ুসেনার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা শাখার রুটিন নজরদারিতে ধরা পড়ে ওই ‘পাক গুপ্তচর’। তাকে বেশ কিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে নড়াচড়া করতে দেখা যায়। যেগুলি ব্যবহার করার ছাড়পত্র তার ছিল না। ফেসবুকের মাধ্যমেও পাক চাঁইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত ধৃত বায়ুসেনার অফিসার। তাকে পাটিয়ালা হাউস কোর্টে তোলা হলে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক দীপক শেহরাওয়াত। লোধি কলোনিতে দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেলে রেখে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার স্মার্টফোনটি পুলিশ ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.