অর্ণব আইচ ও শান্তনু কর: ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে গোট সিকিম (Sikkim) থেকে বিচ্ছিন্ন চুংথাং। সুন্দর শহর পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। সেই চুংথাংকে পুনরুজ্জীবীত করতে দিনরাত কাজ করছেন সেনা জওয়ানরা। চুংথাংয়ের (Chungthang)রাস্তা মেরামত করে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। রাবোম, পেগং গ্রামগুলিতে উদ্ধারকাজ চলছে। সেনা সূত্রে খবর, সোমবার থেকে সিকিমে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় আটকে পড়া পর্যটকদের আকাশপথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেনার পাশাপাশি উদ্ধারকাজে শামিল স্থানীয় গুরুদ্বারের কর্মীরাও। সহায় সম্বলহীন মানুষজনকে রেশন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে এখান থেকেই।
গত সপ্তাহে আচমকা মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানে (Flash Flood) বিপর্যস্ত উত্তর সিকিমের একটা বড় অংশ। তিস্তাপাড়ে ঘনিয়েছে মহা বিপদ। জলস্রোতে ভেসে নিখোঁজ বহু। সেনা ছাউনি ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয় জওয়ানদের। সিকিম বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা আটকে পড়েন। বহু বাঙালি পর্যটকের (Tourists) খোঁজ না মেলায় উদ্বিগ্ন পরিবার। তাঁদের অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। কেউ কেউ বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছেন। বিপর্যয়ের পর থেকেই সিকিমে কাজ করে চলেছে সেনাবাহিনী। সেনা সূত্রে খবর, ২০০০ পর্যটককে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন বেশ কয়েকজন বিদেশিও। তিস্তার (Teesta) জলস্তর একটু কমতেই উদ্ধার হয়েছে একের পর এক দেহ। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪০ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। জলে ভেসে আসা সেনার শেল ফেটে জলপাইগুড়িতে মৃত্যু হয়েছে এক নাবালকের।
সোমবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হয়েছে সিকিমে। সেনার তরফে জানানো হয়েছে, লাচেন চু সেতু মেরামত করা হচ্ছে। তাতেই ধাপে ধাপে বিচ্ছিন্নতা কাটবে। উত্তর সিকিমের বিভিন্ন এলাকার মধ্যে সংযোগ করা সম্ভব হবে। এছাড়া তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় টেলিফোন সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়েছিল বন্যা পরিস্থিতির কারণে। তাও মেরামতির কাজ চলছে। কয়েকটি জায়গায় ফিরেছে টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী টিএস তামাং নিজে দাঁড়িয়ে থেকে উদ্ধারকাজ দেখেছেন সরেজমিনে। সমস্ত সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া কেন্দ্রের তরফেও ৪৪ কোটি টাকা সাহায্য করা হয়েছে। সবমিলিয়ে বিপর্যস্ত সিকিমকে আগের চেহারায় ফেরাতে প্রাণপণ লড়ে যাচ্ছে আইটিবিপি (ITBP)।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.