সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) পাহাড়ি জনপদ যোশিমঠে (Joshimath) এখনও পর্যন্ত ৭৭৩টি বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছে। এই অবস্থায় ১৩১টি পরিবারকে সরানো হয়েছে নিরাপদ স্থানে। এই যদি হয় সাধারণ জনজীবনের হাল, তবে সেনার জন্যও ভাল খবর নেই। যোশিমঠের বিপর্যয়ে এখনও পর্যন্ত সেনাশিবিরগুলির ২০টি ভবনে ‘বিপজ্জনক ফাটল’ দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় চিন সীমান্ত থেকে জওয়ানদের নিরাপদ স্থানে সরানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে জানান সেনা প্রধান মনোজ পাণ্ডে।
আগেই জানা গিয়েছিল, যোশিমঠের বিপর্যয়ে LAC-র সেনাশিবিরগুলির ক্ষতি হয়েছে। সেখানেও ‘বিপজ্জনক ফাটল’ দেখা গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আইটিবিপির বেশ কিছু ঘরবাড়ি। জওয়ান এবং অফিসারদের জন্য বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তা ছাড়া এলএসি-মুখী বেশ কিছু সড়কে ফাটল ধরায় সেনা ও আইটিবিপির গতিবিধি শ্লথ হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দুর্গম সীমান্ত চৌকিগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা কঠিন হচ্ছে। এই অবস্থায় সেনা প্রধান মনোজ পান্ডে জানান, বেশ কিছু সেনাশিবিরে ফাটল ধরায় জওয়ানদের নিরাপদ স্থানে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিন সেনা প্রধান বলেন, “প্রয়োজনে আমরা আরও বেশ কিছু ইউনিট সেনা স্থানান্তর করব, তবে আমাদের অপারেশনাল প্রস্তুতি অক্ষুণ্ণ রয়েছে।” জেনারেল পান্ডে আরও জানান, যে কোনও পরিস্থিতির জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
এদিকে বুধবার রাতে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি এলাকা পর্যবেক্ষণে আসেন। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করে যোশিমঠে আসেন ধামি। বিপর্যস্ত এলাকা খতিয়ে দেখেন। ত্রাণশিবিরেও যান। আশ্বাস দেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্য করা হবে বাজারদর মেনেই। এপর্যন্ত দেড় লক্ষ টাকা করে প্রাথমিক ভাবে আর্থিক সাহায্য করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”আমরা যোশিমঠের মানুষের পাশে রয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত ভাবে বিষয়টির দিকে নজর রেখেছেন। ওঁর সম্পূর্ণ সমর্থন আমার সঙ্গে রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের স্বার্থ অবশ্যই দেখা হবে।” পাশাপাশি ধামির বক্তব্য, এমন বলা হচ্ছে যেন গোটা রাজ্যই ঝুঁকির মুখে। তাঁর কথায়, ”এমন একটা কথা রটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে অলিতে আন্তর্জাতিক শীতকালীন গেমস রয়েছে। কয়েক মাস পরে চারধাম যাত্রা। এই পরিস্থিতিতে এই ধরনের কথা বলা উচিত নয়।”
এদিকে ফাটল আতঙ্কের মধ্যেই যোশিমঠে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। যদিও মুষলধারে নয়, বুধবার থেকে এখনও পর্যন্ত হালকা বৃষ্টির কথাই জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি চামৌলির সুনীল অঞ্চলে শুরু হয়েছে তুষারপাত। আকাশ ঢেকে আছে ঘন মেঘে। এহেন পরিস্থিতিতে ধস নামার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ে খতিয়ে আলোচনা করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জরুরী বৈঠক করছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.