Advertisement
Advertisement
তামিলনাড়ু

পড়ুয়াদের জাত চিনতে বিভিন্ন রংয়ের রিস্ট ব্যান্ড! বিতর্কে তামিলনাড়ুর একাধিক স্কুল

খোদ শিক্ষামন্ত্রীই এই প্রথার পক্ষে সওয়াল করেছেন!

Arm bands bring caste wars to school turf in Tamil Nadu
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:August 19, 2019 3:19 pm
  • Updated:August 19, 2019 3:57 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “জাতের নামে বজ্জাতি সব, জাত-জালিয়াত খেলছ জুয়া! ছুঁলেই তোর জাত যাবে? জাত ছেলের হাতের নয়তো মোয়া। হুঁকোর জল আর ভাতের হাঁড়ি, ভাবলি এতেই জাতির জান, তাইতো বেকুব করলি তোরা এক জাতিকে এক শ’-খান!” কয়েক যুগ আগে সমাজে জাতপাতের বৈষম্য দেখে কথাগুলি লিখেছিলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। গরুর গাড়ির সেই যুগ থেকে আজ সুপারসনিক যুগে পৌঁছেও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক যুগান্তকারী এই কবিতা। সমাজের মধ্যে বর্ণভেদের যে বাড়বাড়ন্ত দেখে প্রতিবাদে মুখর হয়েছিলেন কবি। আজও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দেখা যাচ্ছে সেই পুরনো ছবি! তামিলনাড়ু মতো একটি রাজ্যে জাত বোঝাতে আলাদা রঙের রিস্ট ব্যান্ড পরে স্কুলে আসছে ছোট ছোট শিশুরা। আর এই প্রথাকে সমর্থন জানাচ্ছেন খোদ তামিলনাড়ুর শিক্ষামন্ত্রী কে এ সেঙ্গোত্তাইয়ান।

[আরও পড়ুন: ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় ক্রমেই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা]

প্রথমে নিয়মটির কথা জানাজানি হওয়ার পর দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছিল। তামিলনাড় শিক্ষা দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, যে স্কুলগুলিতে এই ঘটনা ঘটেছে তাদের খুঁজে বের করা হবে। বৈষম্যের কালো বিষ সমাজে ছড়ানোর অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী কাজ এগোচ্ছিল। কিন্তু, তাঁদের সেই উদ্যোগে জল ঢেলে দিলেন খোদ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। আধিকারিকদের পাশে থেকে এই ঘটনার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ না নিয়ে, উলটে এই প্রথার স্বপক্ষেই সওয়াল করলেন।

Advertisement

এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যেমন চলছিল তেমনই চলবে। কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। আমাকে না জানিয়েই এই প্রথা বন্ধ করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু, আমি বিষয়টি জানতে পেরে পদক্ষেপ নিয়েছি। পড়ুয়ারা যেমন রঙিন রিস্ট ব্যান্ড পরে স্কুল আসছিল আগামীতেও তাই করবে।’ যদিও শিক্ষামন্ত্রী এই সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনেই মন্তব্য করেছেন বলে জানান শিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক। তাঁর কথায়, উনি আসল বিষয়টি জানলে এই প্রথা বন্ধ করার উদ্যোগ নেবেন। তাছাড়া এই ধরনের রিস্ট ব্যান্ড ৯৯ শতাংশ স্কুলেই ব্যবহার করা হয় না। মাত্র এক শতাংশ স্কুলে ব্যবহার হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

[আরও পড়ুন: ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধে হার, প্রয়াত বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ মিশ্র]

কিছুদিন আগে ২০১৮ সালের আইএএস আধিকারিকদের ব্যাচের পক্ষ থেকে একটি সার্ভে করা হয়েছিল। তাতে জানা যায়, তামিলনাড়ুর কিছু স্কুলে জাত অনুযায়ী পড়ুয়াদের লাল, হলুদ, গেরুয়া কিংবা সবুজ রিস্ট ব্যান্ড পড়ে আসতে হচ্ছে। এমনকী তারা উঁচু না নিচু জাতের তা বোঝাতে নির্দিষ্ট রঙের আংটি ও কপালে তিলক কাটতে হচ্ছে। কয়েকটা স্কুলে আবার স্কুল পোশাকের নিচে নিজেদের জাতের নেতার ছবি দেওয়া গেঞ্জি পড়ে আসতে হয়। একদম অঙ্গনওয়াড়ি থেকেই এই সিস্টেম চালু করা হয়েছে স্কুলগুলিতে। বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হলেও তাতে গুরুত্ব দিচ্ছে না তামিলনাড়ু সরকার। কিছু সমাজকর্মী প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলেও অদ্ভুত ভাবে চুপ রয়েছে সরকার বিরোধী দলগুলি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement