সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জ্ঞানবাপী বিতর্কের মাঝেই এবার শিরোনামে মধ্যপ্রদেশের ভোজশালা। এই স্থান হিন্দুদের উপাসনাস্থল নাকি মুসলিমদের? বিতর্ক চরম আকার নিতেই ওই স্থানে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)কে বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সদ্য পেশ হয়েছে সেই সমীক্ষার রিপোর্ট। সেখানে একাধিক ঐতিহাসিক নমুনার পাশাপাশি পাওয়া গিয়েছে ৯৪ টি মূর্তি। এর পরই হিন্দুত্ববাদীদের তরফে দাবি হল হল, ভোজশালার জমির নিচে পাওয়া গিয়েছে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি ও মন্দিরের অস্তিত্ব।
মধ্যপ্রদেশের ধার শহরের ভোজশালায় রয়েছে হাজার বছরের পুরানো একটি বিতর্কিত সৌধ। মুসলিমদের দাবি ওটি আসলে মসজিদ। অন্যদিকে হিন্দুদের দাবি ওই সৌধ রাজা ভোজের তৈরি সরস্বতী মন্দির। সরকারি নিয়ম মেনে সপ্তাহে দুদিন দুই ধর্মের মানুষই এখানে পালন করে ধর্মীয় আচার। বাকি দিনগুলোতে এখানে প্রবেশের অনুমতি থাকলেও পুজো বা নামাজ নিষিদ্ধ। এই নিয়মে বদল চেয়ে ২০২২ সালে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। হিন্দু পক্ষের আইনজীবী হরিশংকর জৈন মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টকে জানান, ২০০৩ সালের একটি নোটিসের জেরে মুসলিমদের ভোজশালায় নমাজের অধিকার দেওয়া হয়েছিল ঠিকই কিন্তু এটি আসলে হিন্দু মন্দির। তাই এখানে শুধুমাত্র হিন্দুদের উপাসনার অনুমতি দেওয়া হোক।
আবেদনের ভিত্তিতে চলতি বছরের মার্চ মাসে এই বিতর্কিত ধর্মীয় স্থানে এএসআইকে সমীক্ষার অনুমতি দেয় মধ্য প্রদেশ হাইকোর্ট। ওই সৌধ চত্বরের আনুমানিক বয়স নির্ধারণ করতে এএসআইকে সৌধ চত্বরের ভূমি খনন করে কার্বন ডেটিং প্রক্রিয়া প্রোয়োগ করতে বলা হয়। সোমবার সেই সমীক্ষারই দু হাজার পাতার রিপোর্ট আদালতে জমা দেয় এএসআই। সেখানে বলা হয়, ওই স্থানে ৯৪টি ভাস্কর্য ও নানা ধরনের স্থাপত্য মিলেছে। এই ভাস্কর্যগুলি বেসল্ট, মার্বেল, বেলেপাথর এবং চুনাপাথর দিয়ে তৈরি। প্রাথমিকভাবে সেগুলিকে দেবদেবী, মানুষ এবং পশুদের মূর্তি বলে অনুমান করা হচ্ছে। এর পরই হিন্দুপক্ষের তরফে দাবি করা হয়, ওই চত্বরে মিলেছে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি।
সেই রিপোর্টকে হাতিয়ার করেই সোমবার হিন্দুপক্ষের আইনজীবী হরিশঙ্কর বলেন, ”ভোজশালা মন্দিরে ৯৪টি ভাঙা দেবদেবীর মূর্তির সন্ধন মিলেছে। সেই সঙ্গে পাথরে খোদাই করা পশুদের অবয়বও শনাক্ত হয়েছে। যে কেউ এই জিনিসগুলি দেখে সহজেই বলতে পারবে যে এটি মন্দির ছিল। আজ খুব আনন্দের দিন। এএসআইয়ের রিপোর্টে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে এখানে আগে হিন্দুদের মন্দির ছিল। ফলে এখানে শুধুমাত্র হিন্দুদের পুজোই হওয়া উচিত।” প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতে এএসআই রিপোর্টে ‘হিন্দুত্বের অস্তিত্বের’ কথা জানানোর পরেই জ্ঞানবাপীতে পূজার্চনার অনুমতি দিয়েছিল বারাণসী জেলা আদালত। এবার ভোজশালায় সেই একই ছবি ধরা পড়েছে বলে দাবি করছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.