সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অন্তঃসত্ত্বা হাতিকে ‘খুনের’ ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। তার মাঝেই ফের সামনে এল আরেকটি হাতির মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর। কেরলের মালাপ্পুরমের পর এবার ঘটনাস্থল কোল্লাম। পাঠানাপুরম জঙ্গলের কাছে একটি ঝরণার পাশ থেকে গত এপ্রিলে অসুস্থ অবস্থায় ওই স্ত্রী হাতিটিকে উদ্ধার করেন বনকর্মীরা। সেই সময় তার চোয়াল ভাঙা ছিল। উদ্ধারের পর ওষুধপত্রও দেওয়া হয় হাতিটিকে। তবে তাতেও কাজ হয়নি। কিছুটা পথ আপন মনে হেঁটে যায় সে। তবে পরেরদিনই মারা যায় ওই হাতিটি। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে এসেছে বনকর্মীদের। তাতেও চোয়াল ভাঙার কথা উল্লেখ রয়েছে। বনকর্মীদের অনুমান, এই হাতিটির মৃত্যুর পিছনেও হয়তো বাজি বিস্ফোরণের মতো অমানবিক আচরণ লুকিয়ে রয়েছে। তাকে বিষ খাওয়ানোও হতে পারে বলে আশঙ্কা বনকর্মীদের। যদিও সে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। বিস্তারিত ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার অপেক্ষায় বনদপ্তর।
সদ্যই কেরলের মালাপ্পুরমে গর্ভবতী হাতিকে ‘খুনের’ ঘটনা সামনে আসে। অপরাধ বলতে খাবারের খোঁজে লোকালয়ে চলে এসেছিল সে। কারও কোনও ক্ষতি করেনি। কিন্তু গ্রামে হাতিকে ঘুরতে দেখেই সকলে ভেবে ফেলেছিল হাতিটি নির্ঘাত কোনও ক্ষতি করবে। হয় ভাঙবে কাঁচাবাড়ি আর না হলে দাপিয়ে বেড়াবে ফসল ভরা মাঠে। আবার কেউ ভেবেছিল কারও প্রাণহানির কারণও হতে পারে সে। কিন্তু অবলা প্রাণীটির এমন কোনও ষড়যন্ত্র ছিল না। তার চোখ শুধুই একটু খাবারের সন্ধান করছিল।
খাবার খেয়ে নিজের এবং তার গর্ভস্থ সন্তানের পেটের জ্বালা মেটাতে চেয়েছিল সে। ভাবতেও পারেনি সেই জ্বালা মেটাতে গেলে প্রাণ পর্যন্ত চলে যেতে পারে। তাই তো বাজি এবং বারুদে ঠাসা আনারস খেয়ে নেয়। খাওয়ার পর থেকে শরীরের ভিতর অদ্ভূত জ্বালা যন্ত্রণা শুরু হয়। অবলা প্রাণী নিজের কষ্টের কথা কাউকে জানাতে পারেনি। শুধু পথের পর পথ হেঁটে কষ্ট সহ্য করে গিয়েছে। তারপর একটি নদীতে নেমে যায় অন্তঃসত্ত্বা হাতিটি। জলের মধ্যে শুঁড় ডুবিয়ে বসে কষ্ট লাঘব করার চেষ্টা করছিল। কাজের কাজ হয়নি। সেভাবেই কখন যে সে প্রাণ হারিয়েছে জানতে পারেনি কেউই।
কেরলের বনবিভাগের আধিকারিক মোহন কৃষ্ণণ হাতির এমন দুঃখজনক মৃত্যুর খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। ওই পোস্টটি নিমেষে ভাইরাল হয়ে যায়। পশুপ্রেমীরা এই ধরনের ঘটনার নিন্দায় সরব। এই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.