সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের অসমের ডিটেনশন ক্যাম্পে মৃত্যু হল এক ‘বিদেশি’র। ঘটনাস্থল গোয়ালপাড়ার ডিটেনশন ক্যাম্প। মৃতের নাম নরেশ কচ (৫০)। গত সপ্তাহে ডিটেনশনের ক্যাম্পের শৌচাগার সাফাই করার সময় তিনি আচমকাই জ্ঞান হারান। এরপর তাঁকে গোয়ালপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন থাকাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে দিতে নারাজ অসম প্রশাসন। তাই রাতেই নরেশের দেহ সৎকারের নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকী দেহ সৎকারের জন্য পুলিশের তরফে কোনও সাহায্য করা হয়নি বলেও অভিযোগ। পরিসংখ্যান বলছে, নরেশের মৃত্যুর পর অসমের বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৯।
জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে নরেশকে ‘বিদেশি’ বলে চিহ্নিত করে অসম প্রশাসন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের হয়নি বলেই জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী জিমি। তিনি জানান, ১৯৬৪ সালে অসমে এসেছিলেন নরেশ। NRC-তে সমস্ত নথিও জমা করেছিলেন তিনি। তারপরেও তাঁকে নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকার করে প্রশাসন। জুন মাস থেকে তাঁকে ও তাঁর পরিবার ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়। এ প্রসঙ্গে জিমি বলেন, “বাজার এলাকা থেকে আমাদের সরিয়ে নিয়ে আসা হয়। কোনওরকমে বেঁচে রয়েছি। কিন্তু গত সপ্তাহে শৌচাগার সাফাই করার সময় আচমকাই নরেশ জ্ঞান হারায়। ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর প্যারালাইসিস হয়ে যায়। তারপর তার মৃত্যু হয়।”
নরেশের সৎকার নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। অভিযোগে, সৎকারের জন্য পুলিশের কোনও সাহায্য মেলেনি। এমনকী রাতের আন্ধকারে সৎকারের নিদান দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে, গোয়ালপাড়া শ্মশানের সেক্রেটারি ছন্দ্রা বানাই বলেন, “পুলিশ রাতে সৎকার করার জন্য আমাকে চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু আমি তা করব না বলেই জানিয়েছিলাম। তখন তাঁরা বলে, উপরমহল থেকে রাতে সৎকারের জন্য নির্দেশ রয়েছে।” প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জির প্রথম খসড়াটি প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল দেড় কোটি বাঙালির নাম নেই। নাম ছিল না এমন বহু বাঙালির যাঁরা ১০০ বছরেরও উপর অসমে রয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.