সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিগত প্রায় ১৫ বছরের বিবাদ ভুলে ভাই অনিলের বিপদের দিনে পাশে এসে দাঁড়ালেন দাদা মুকেশ আম্বানি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, রিলায়েন্সের সহযোগী সংস্থা এরিকসনের বকেয়া টাকা না মেটাতে পারলে জেলে যেতে হত অনিল আম্বানিকে। যার সময়সীমা ছিল মঙ্গলবার পর্যন্ত। তবে, সোমবারই সুইডিশ টেলিকম সংস্থা এরিকসনের সেই বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিলেন আর কম-এর কর্ণধার অনিল আম্বানি। সৌজন্যে দাদা মুকেশ আম্বানি। টাকার অঙ্কের পরিমাণও নেহাত কম নয়। এক-দু’ লাখ নয়, বকেয়ার অঙ্ক ছিল ৫৫০ কোটি। সেই বিপুল আর্থিক বকেয়ার পুরোটাই ভাইকে দিলেন মুকেশ আম্বানি।
সোমবার রাতে রিলায়েন্স কমিউনিকেশন-এর তরফে অনিল আম্বানির দেওয়া বিবৃতি থেকে একথা জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, নিজের বিবৃতিতে তিনি ধন্যবাদও জানিয়েছেন দাদা মুকেশ আম্বানি এবং বৌদি নীতা আম্বানিকে। তিনি জানিয়েছেন, “এই বিপদের সময়ে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য দাদা-বৌদি মুকেশ ও নীতাকে আমার তরফে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধের প্রতি আস্থা রাখার জন্য এবং এই সময়োচিত সৌজন্যের জন্য ধন্যবাদ। আমি এবং আমার পরিবার কৃতজ্ঞ যে আমরা অতীত ভুলে এগিয়ে এসেছি। এই সৌজন্যবোধ দেখে আমি অভিভূত,” নিজের বিবৃতিতে এমনটাই বলেছেন অনিল আম্বানি।রিলায়েন্স কমিউনিকেশন-এর কর্ণধার অনিল আম্বানী আরও জানান, “সুইডিশ টেলিকম সংস্থার দেনা মিটিয়েছে মুকেশ আম্বানির সংস্থা। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ৫৫০ কোটি টাকার বকেয়া সুদ সমেত মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে এরিকসনকে।”
[গোয়ার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত? জোটসঙ্গীদের সন্তুষ্ট রাখতে নয়া ভাবনা বিজেপির]
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে সুইডিশ সংস্থা এরিকসেনর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল রিলায়েন্স। ওই চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ৭ বছরের জন্য এদেশে রিলায়েন্সের টেলিকম নেটওয়ার্ক সামলানোর দায়িত্ব পায় এরিকসন। কিন্তু, সেবছর থেকেই বকেয়া ১৫০০ কোটি টাকা পাওনা না মেটানোর জন্য রিলায়েন্সের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল কোম্পানি ল’ অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল-এর কাছে মামলা দায়ের করে এরিকসন। যার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্টের দোর অবধি। শেষে সেই ১৫০০ কোটি টাকার পরিবর্তে গোটা ব্যাপারটা ৫৫০ কোটিতে রফা করার সিদ্ধান্ত নেয় দুই সংস্থা। এরপরই রিলায়েন্সকে ১২০ দিনের মধ্যে বকেয়া টাকা মেটানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তবে, টাকাও মেটানো নিয়ে শীর্ষ আদালতের সেই আদেশকেও অনিল অবমাননা করেছেন বলে অভিযোগ।
এরপর ফের আদালতের দ্বারস্থ হয় এরিকসন। যার জেরে চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারিতেই দোষী সাব্যস্ত হন অনিল আম্বানী। ১৯ মার্চের মধ্যে সে টাকা না মেটাতে পারলে শ্রীঘরে জায়গা হত অনিলের। তবে, নির্ধারিত দিনের ঠিক একদিন আগেই এরিকসনের যাবতীয় বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিয়ে এই মামলা থেকে মুক্তি পেলেন অনিল আম্বানী। তবে তাঁর এই দুর্দিনে দাদা পাশে না দাঁড়ালে কী হত, বলা মুশকিল৷
২০০২ সালে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ-এর প্রতিষ্ঠাতা ধীরুভাই আম্বানীর মৃত্যুর পরই তিক্ত হতে শুরু করে দুই ভাইয়ের সম্পর্ক। একসময়ে সেই ওই গোষ্ঠীর ব্যবসার দায়িত্ব নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন মুকেশ ও অনিল আম্বানি। তবে, এরিকসম মামলায় অতীতের সমস্ত দ্বন্দ্ব-কলহ ভুলে ভাইয়ের কাঁধে হাত রেখে সমস্যা মেটালেন মুকেশ আম্বানি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.