সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা ছুঁলে মৃত্যু! এই আশঙ্কায় টানা ১৫ মাস একটি ঘরের মধ্যে নিজেদের বন্ধ করে রেখেছিলেন তাঁরা। এরপর…। করোনা তাঁদের ছুঁতে পারেনি। কিন্তু বর্তমানে হাসপাতালের বিছানায় অপুষ্টির সঙ্গে লড়াই করছেন এক পরিবারের তিন মহিলা। অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জেলার কাণ্ডালি গ্রামের এই ঘটনায় হতবাক প্রতিবেশী থেকে প্রশাসন।
করোনা ছুঁয়ে ফেললে সব শেষ। এই ভয়ে ১৫ মাস আগে পরিবার নিয়ে নিভৃতবাসে থাকার সিদ্ধান্ত নেন পেশায় সাইকেল মিস্ত্রি বছর পঞ্চাশের জন বেনি। আত্মীয় থেকে প্রতিবেশী তাঁদের বুঝিয়েও পারেননি। গত সোমবার অবশেষে পুলিশ গিয়ে তাঁদের নিভৃতবাস থেকে উদ্ধার করে। দুর্বল অবস্থায় নিভৃতবাস থেকে বাইরে আসছেই বাড়ির উঠোনে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান তিন মহিলা। তাঁদের হাসপাতালে ভরতি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ভিটামিনের অভাবে এখন অপুষ্টির সঙ্গে লড়াই করছেন তাঁরা। পাশাপাশি মানসিকভাবেও বিধ্বস্ত তিন মহিলা। কেন এই ভয়ংকর পণ?
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত বছর মার্চ মাসে করোনার প্রথম ধাক্কায় গ্রামে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছিল। সবাই ভেবেছিল করোনাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আর সেই ভয়ে পুরো পরিবারকে নিয়ে নিভৃতবাসে চলে যান বেনি। কাণ্ডালির পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, ওই সময় সরকারি উদ্যোগে গ্রামে স্যানিটাইজেশনের কাজ হয়েছিল। কিন্তু সেই পরিষেবা নিতে অস্বীকার করেছিল ওই পরিবার। কারণ, তাঁদের আশঙ্কা ছিল সরকারি কর্মীদের সংস্পর্শে এলেও তাঁদের শরীরের করোনা বাসা বাঁধতে পারে।
কাণ্ডালির পঞ্চায়েত প্রধান জানান, রবিবার জন বেনির কয়েকজন আত্মীয় তাঁদের কাছে আসেন। এবং বলেন, এখনই তাঁদের উদ্ধার করতে না পারলে হিতে বিপরীত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। সোমবার পুলিশ বাড়ির দরজা ভেঙে ওই পরিবারের পাঁচজনকে উদ্ধার করে। পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, উদ্ধারের সময় দেখা যায় পরিবারের তিন মহিলার অবস্থা খুবই গুরুতর। তাঁদের জেলা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। যদিও গ্রামের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, মহিলারা নিভৃতবাসে থাকলেও এই ১৫ মাসে মাঝেমধ্যে জন বেনি, তাঁর ছেলে চিনাবাবুকে বাইরে আসতে দেখা গিয়েছে। গ্রামের মুদিখানার দোকান থেকে শুরু করে তাঁদের দোকানেও দেখা গিয়েছে বেনি ও তাঁর ছেলেকে। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই কি নিভৃতবাসের সিদ্ধান্ত ছিল, না কি রয়েছে অন্য মতলব? খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.