সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোট দরজায় কড়া নাড়তেই খাতির বেড়ে যায় উত্তরপ্রদেশের এক পরিবারের। দলে দলে তাঁদের বাড়িতে হাজির হন সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। অন্য ভোটারদের থেকে কিছুটা বেশিই সমাদর পান তাঁরা। কিন্তু কেন? কারণ, নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির এই যুগে তাঁদের পরিবারের ভোটার সংখ্যা ৬৬ জন। তাই তাঁদের পরিবারের একটি ভোটও হাতছাড়া করতে চায় না কোনও দলই।
উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদের বাহরাইচ গ্রামে বাস এই পরিবারের। গৃহকর্তা রাম নরেশ ভুরটিয়ার বয়স ৯৮ বছর। আর সদস্য সংখ্যা ৮৩ জন। সেই কারণেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফেই বেশ খাতির, যত্ন পান তাঁরা। এমনকী সপরিবারে ভোট দিতে গিয়েও বেশ আপ্যায়ণ পান পরিবারের সদস্যরা। কারণ, ৬৬ টি ভোট। কিন্তু সেটা ভোট পর্যন্তই। অভিযোগ, ভোট মিটতেই তাঁদের সমস্যার খোঁজ রাখেন না কেউ। জানা গিয়েছে, ওই পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যের পেশাই চাষাবাদ। দু’জন সদস্য মুম্বইয়ে বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। অর্থাৎ আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ওই পরিবার।
কিন্তু এখনও তাঁদের বাস অবশ্য মাটির বাড়িতেই। কিন্তু কেন? সমস্যা একটাই। তাঁদের বাড়ির ঠিক উপর দিয়েই গিয়েছে হাই টেনশন তার। আর তাই পাকা বাড়ি বানানো সম্ভব হচ্ছে না। রাম নরেশের কথায়, “প্রতিবার ভোটের আগে প্রার্থীরা ভোট চাইতে আসেন, আমরা সমস্যার কথা বলি। বিদ্যুতের তার সরিয়ে নিতে বলি। সবাই আশ্বাস দেন৷ বলেন, ঠিক করে দেবেন৷ কিন্তু তারপর কেউ কাজ করেন না। বাড়ির মেয়েদের আলাদা ঘর দরকার। কিন্তু এই সমস্যার জেরে আমরা কিছুই করতে পারছি না।” এ প্রসঙ্গে রাম নরেশের নাতি শংকর বলেন, “আমরা এ বার দেখব সমস্যার সমাধান হচ্ছে কিনা। না হলে পরের বার আমরা বলব, আগে সমস্যার সমাধান করুন, তারপরেই আমরা ভোট দিতে যাব।”
প্রসঙ্গত, ভুরটিয়া পরিবারের ৮২ জনের বাস একই বাড়িতে। ওই পরিবারে একটাই রান্নাঘর। গৃহকর্তা জানান, এখনও কেউ আলাদা থাকার কথা ভাবেনওনি। এটাই এই পরিবারের বিশেষত্ব। রাম নরেশ জানিয়েছেন, প্রতিদিন ২০ কেজি সবজি, ১৫ কেজি চালের ভাত ও ১০ কেজি গমের রুটি রান্না হয় তাঁর বাড়িতে। তিনি বলেন, “আমি খুব খুশি যে আমার পরিবারের কেউ কোনও দিন আলাদা থাকার কথা ভাবেনি। আমার মনে হয় আমরা সবার কাছে উদাহরণ। এভাবেই সবাই মিলে একসঙ্গে থাকা দরকার।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.