সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজিয়াবাদ যাওয়ার কথা ছিল ৮২ বছরের বৃদ্ধ রাম অবধ দাসের। কানপুর-নিউ দিল্লি শতাব্দী এক্সপ্রেসে টিকিটও কাটা হয়ে গিয়েছিল। অথচ কনফার্মড টিকিট থাকা সত্ত্বেও ট্রেনে উঠতে দেওয়া হল না তাঁকে। বৃদ্ধের অভিযোগ, গায়ে জড়ানো ধুতি দেখেই তাঁকে ট্রেনে উঠতে দেয়নি রেল পুলিশ ও কোচ অ্যাটেনডেন্ট। ক্ষুব্ধ রাম অবধের প্রশ্ন, দেশে কি ব্রিটিশ শাসন চলছে? পোশাক দেখে এমন অবাঞ্ছিত ব্যবহার কেন?
[ আরও পড়ুন: ৬ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর পেটে কামড়, ফের নির্ভয়া কাণ্ডের ছায়া রাজধানীতে]
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে ট্রেন ধরার জন্য বারাবাঁকির বাসিন্দা রাম অবধ দাস এটাওয়া স্টেশনে আসেন। সেখান থেকেই গাজিয়াবাদগামী শতাব্দী এক্সপ্রেস ধরার কথা ছিল তাঁর। নির্দিষ্ট কোচে উঠতে গিয়েই বিপত্তি ঘটে। অভিযোগ, গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা রেল পুলিশের কর্মী ও কোচ অ্যাটেনডেন্ট তাঁকে আটকান। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে রাম অবধ বলেন, “আমি স্তম্ভিত। মনে হচ্ছে, আমরা এখনও ব্রিটিশ যুগে বাস করছি। আমার টিকিট থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র আমি অন্য ধরনের পোশাক পরেছি বলে, আমাকে ট্রেনে উঠতে দেওয়া হল না!” উত্তর-মধ্য রেলওয়ের কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন ক্ষুব্ধ বৃদ্ধ। রাম অবধ আরও জানিয়েছেন, তিনি বারবার বলেছিলেন যে, তাঁর কাছে কনফার্মড টিকিট আছে। তাতেও কেউ কর্ণপাত করেনি। তিনি বলেন, “ওরা বলছিল, বাবা তুমি ভুল ট্রেনে উঠে গিয়েছ। তোমার ট্রেন কানপুরে আছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এটাওয়া এসে পৌঁছবে।” শেষ পর্যন্ত রাম অবধ অন্য কামরায় ওঠার চেষ্টা করেন, কিন্তু তার আগেই ট্রেন ছেড়ে দেয়। তখন বাধ্য হয়ে স্টেশন মাস্টারের কাছে গিয়ে সব খুলে বলেন ওই বৃদ্ধ। টিকিটও দেখান। সেখানে দেখা যায়, তাঁর পিএনআর নম্বর- ২১৬৪৩৭১৫৫৬ এবং শতাব্দী এক্সপ্রেসের সি২ কোচের ৭১ নম্বর সিটে তাঁর কনফার্মড টিকিট ছিল।
[ আরও পড়ুন: ‘ফাঁসানো হচ্ছে’, রাষ্ট্রপতিকে রক্তে লেখা চিঠিতে সাহায্যের আরজি দুই বোনের ]
জানা গিয়েছে, অভিযোগ পেয়েই তৎপর হন উত্তর-মধ্য রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক অজিত কুমার সিং৷ তিনি জানিয়েছেন, ওই বৃদ্ধকে নির্দিষ্ট কামরায় উঠতে না দিয়ে অন্য কামরায় উঠতে বলা হয়। কিন্তু এটাওয়াতে মাত্র দু’মিনিট ট্রেন থামে। তাই তিনি অন্য কামরায় উঠতে পারেননি। এই ঘটনায় যাঁরা যুক্ত, তাঁদের চিহ্নিত করে তদন্তের পর শাস্তি দেওয়া হবে। বারাবাঁকির বাসিন্দা রাম অবধ দাসের অনেক শিষ্য রয়েছে এটাওয়াতে। প্রতি বছরই সেখানে যান তিনি। তাঁর এক শিষ্যা সুজাতা দুবে জানিয়েছেন, “বাবা প্রতিবার বর্ষাকালে আমাদের বাড়ি আসেন। পুজো করেন। এ বারও এসেছিলেন। তাঁর ফেরার কথা ছিল গাজিয়াবাদ। আর ফেরার পথেই এই ঘটনা হল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.