সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কবে থেকে বাংলা-সহ গোটা দেশজুড়ে লাগু হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর চাপানউতোর। তারই মাঝে বড় বড় ঘোষণা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তাঁর দাবি, লোকসভা ভোটের আগেই লাগু হবে সিএএ।
শনিবার দিল্লিতে গ্লোবাল বিজনেস সামিটে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “কংগ্রেস সরকার একসময় সিএএ লাগুর আশ্বাস দিয়েছিল। কংগ্রেসই শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। এখন তারা অন্য কথা বলছে।” অমিত শাহের আশ্বাস, “CAA কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে কোথাও একথা বলা নেই। বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে আসা নিপীড়িত শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে এই আইন।”
দিল্লিতে দ্বিতীয় মোদি সরকার গঠনের পরই ২০১৯ সালে এই নাগরকিত্ব সংশোধনী আইন পাশ করানো হয়েছিল। কিন্তু মাঝে বেশ কয়েকটি বছর কেটে গেলেও, সেই আইন এখনও কার্যকর হয়নি। কেন আইন এখনও কার্যকর হচ্ছে না তা নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা যেমন হয়েছে, তেমনই আমজনতার মধ্যেও কৌতূহল তৈরি হয়েছে বিস্তর। CAA ইস্যুতে বাংলার রাজনৈতিক মহলেও চলছে জোর চাপানউতোর। গত ২৮ জানুয়ারি, কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর দাবি করেন, ‘‘যাঁরা ১৯৭১ সালের পরে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দরকার। কারণ, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করতে হবে। বিজেপি সরকার সিএএ চালু করলে আর কোনও সরকারের ক্ষমতা নেই, আমাদের যখন খুশি ঘাড়ধাক্কা দিয়ে দেশ থেকে বার করে দেয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ চালু করবে।’’
বলে রাখা ভালো, প্রথম থেকে সিএএ ইস্যুতে তৃণমূলের গলায় বিরোধিতার সুর। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনুর দাবিতেও পালটা সুর চড়িয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটের জন্য বিজেপি CAA অস্ত্রে শান দিচ্ছে বলেই দাবি করেন মমতা। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এখন ক্যা-ক্যা করে চিৎকার করছে। এটা ফ্যা-ফ্যা ভোটের রাজনীতি করার জন্য। আপনারা সবাই নাগরিক। আপনাদের সবাইকে নাগরিক হিসাবে আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি। সমস্ত উদ্বাস্তু কলোনিকে স্থায়ী ঠিকানা দিয়ে দিয়েছি। তারা সবাই রেশন পায়, স্কুলে যায়, স্কলারশিপ পায়, কিসান বন্ধু পায়, শিক্ষাশ্রী পায়, ঐক্যশ্রী পায়, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পায়। সে নাগরিক না হলে থোড়াই এ সব পেত। নাগরিক না হলে তারা ভোট দিতে পারত?’’
তার পরই মাত্র সপ্তাহখানেকের কার্যত ডিগবাজি খেয়ে শান্তনু ঠাকুর নিজের অবস্থান বদল করেন। তিনি দাবি করেন, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে রুল ফ্রেম (নীতি প্রণয়ন) সম্পন্ন হবে বলতে গিয়ে মুখ ফসকে গিয়েছিল। কিন্তু CAA কিছুদিনের মধ্যে লাগু হবে এটা ১০০% গ্যারান্টি।’’ আগামী এপ্রিলেই সম্ভবত লোকসভা নির্বাচন। সেক্ষেত্রে অমিত শাহের দাবি অনুযায়ী আর মাসখানেকের মধ্যেই দেশজুড়ে লাগু হতে পারে CAA। ‘শাহি’ দাবি ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই নানা জল্পনা দানা বাঁধছে। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “সকলেই নাগরিক। আলাদা করে অমিত শাহ নাগরিকত্ব দেবেন কীভাবে? আর যদি উনি বলেন অনুপ্রবেশ হচ্ছে। তবে তার দায়ও শাহের বিএসএফেরই। কারণ, সীমান্ত পাহারা দেয় বিএসএফ।”
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.