Advertisement
Advertisement

জানেন, জিএসটি রূপায়ণের মূল কারিগর এই বাঙালিরাই?

যা নিয়ে সারা দেশ উত্তাল, দুই বাঙালির পরিশ্রমেই তা সম্ভব হয়েছে।

Amit Mitra & Ashim Dasgupta, architects of much lauded GST reforms
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 29, 2017 2:21 pm
  • Updated:June 29, 2017 2:21 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরই দেশে চালু হচ্ছে পণ্য পরিষেবা কর বা জিএসটি। সারা দেশ বাঁধা পড়ছে এক কর কাঠামোয়। মধ্যরাতে অনুষ্ঠান করে এই কর সংস্কার চালু করার ভাবনা কেন্দ্রের। আর এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের নেপথ্য কারিগর হিসেবে থেকে যাচ্ছেন একজন বাঙালিই। তিনি বাংলার প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত।

রাষ্ট্রপতি থাকতে প্রধানমন্ত্রী জিএসটি চালু করবেন কেন, প্রশ্ন কংগ্রেসের ]

Advertisement

একদিনের চেষ্টায় জিএসটি-র মতো এই জটিল বিষয়ের রূপায়ণ সম্ভব হয়নি। মোদি সরকারের আমলে তা চালু হলেও জিএসটি-র ভাবনা কিন্তু ভাবা হয়েছিল সেই ১৯৯৯ সালে। তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। উপদেষ্টা কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর তিনিই দেশকে এক কর ব্যবস্থায় বাঁধার সবুজ সংকেত দেন। এবং এ বিষয়ে যোগ্য লোক হিসেবে নির্বাচিত করেন বাংলার তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তকে। বাংলায় সে সময় মুখ্যমন্ত্রীর আসনে জ্যোতি বসু। বাজপেয়ী অনুরোধ করেন, জ্যোতি বসু যেন অসীমবাবুকে জিএসটি কমিটির জন্য কাজ করার সুযোগ দেন। এরপরই শুরু হয় জিএসটি রূপায়ণ।

asim-dasgupta

এরপর ক্ষমতায় আসে ইউপিএ সরকার। প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেন মনমোহন সিংহ। তিনি নিজেও তুখোড় অর্থনীতিবিদ। রাজনৈতিক পালাবদল ঘটলেও অসীমবাবুকে তিনি জিএসটি কমিটির প্রধান পদ থেকে সরাননি। জিএসটি রূপায়ণের যোগ্য লোক হিসেবে দেশের অন্যতম সেরা এই অর্থনীতিবিদের উপরই আস্থা ছিল তাঁর। বরং জিএসটি বিল রূপায়ণ কমিটিরও প্রধান হিসেবে তিনি অসীমবাবুকে নির্বাচিত করেন। প্রায় সাত বছর এ কাজ করেন অসীম দাশগুপ্ত। রাজ্য সরকার, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে কথা বলে কাজ এগোতে থাকেন তিনি। মূলত জিএসটি-র প্রধান ও প্রথম কারিগর তাঁকেই বলা যায়।

[ আধার যোগ না করলে কি ১ জুলাই থেকে বাতিল প্যান কার্ড?  ]

২০১১-তে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় যখন এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন জিএসটি কমিটির প্রধান পদ থেকে সরে যান অসীমবাবু। সে সময় এই প্রকল্পের কাজ প্রায় আশি শতাংশ শেষ হয়েছে। এরপর এই দায়িত্ব নেন কেরলের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী কেএম মনি। তবে তিনি কাজ শেষ করে যেতে পারেননি। দুর্নীতির অভিযোগের জেরে এই পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। এরপর এই দায়িত্ব বর্তায় ফের এক বাঙালির উপরই। তিনি বাংলার বর্তমান অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। মূলত জিএসটি রূপায়ণে যে সব রাজ্যগুলি রাজি হয়েছিল, সে কৃতিত্ব অমিতবাবুরই। তিনিই বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করে জিএসটি-র সুফল বোঝান। তার ফলেই জিএসটি চালু হওয়ার পথ সুগম হয়। যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে তৃণমূল জিএসটি-র অনুষ্ঠানে না থাকা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ যাঁর হাত ধরে জিএসটি রূপায়ণে রাজ্যগুলির সম্মতি এসেছিল, তিনিই এখন এই মঞ্চে থাকবেন না।

amitmitra

এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের নামও উল্লেখযোগ্য। ২০১০ সালে তিনি জিএসটি চালু করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। কিন্তু ইউপিএ সরকারের দ্বিতীয় জমানায় রাজনৈতিক জটিলতার কারণে তা রূপায়ণ করা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত মোদি সরকারের আমলে অর্থমন্ত্রী হয়ে আসেন অরুণ জেটলি। তাঁর হাত ধরেই দীর্ঘলালিত জিএসটি-র ভাবনা বাস্তবের জমি পাচ্ছে।

তবে এই জিএসটি-রূপায়ণের নেপথ্য কৃতিত্ব যদি কারও থেকে থাকে তবে তা দুই বাঙালিরই। অসীম দাশগুপ্ত যেমন জিএসটি-র ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছিলেন, তেমনই সব রাজ্যকে এক ছাতার তলায় এনে অমিত মিত্রই জিএসটি রূপায়ণের পথ সুগম করেছিলেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement