সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যে কোনও সময় সিন্ধিয়ার পথ ধরতে পারেন শচীন পাইলট(Sachin Pilot)! এই আশঙ্কা থেকে আগেভাগেই প্রস্তুতি সেরে রাখছে কংগ্রেস। মানুষের বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন। আগামিদিনে এমন পরিস্থিতি এড়াতে গেহলটকে(Ashok Gehlot) দিল্লিতে তলব করেন অন্তর্বর্তী কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। গেহলটের তোপ, আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। আদতে এই মন্তব্য করে তিনি রাজস্থানের তরুণ কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলটকে বার্তা দিলেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
মধ্যপ্রদেশে সিন্ধিয়া বনাম কমল নাথ দ্বন্দ্বের মতোই রাজস্থানে গেহলট বনাম শচীন পাইলটের কোন্দল সর্বজনবিদিত। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে ক্রমশ কোণঠাসা হওয়া জ্যোতিরাদিত্য মঙ্গলবার কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। সেই আবহেই জ্যোতিরাদিত্যের সমালোচনা করতে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর একের পর এক টুইট, ‘এমন জাতীয় সংকটের সময় বিজেপিতে যোগদান আদতে নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রকাশের উদ্যোগ। যে সময় বিজেপি দেশের অর্থনীতি, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও বিচারব্যবস্থার কণ্ঠরোধ করছে, সে সময় কংগ্রেস ত্যাগ করা মানে নিজের আদর্শের সঙ্গে আপস। এই ধরনের মানুষ ক্ষমতা ছাড়া থাকতে পারেন না, ফের প্রমাণিত হল।
জ্যোতিরাদিত্যর(Jyotiraditya Scindia) পথেই কমলনাথ সরকার থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অন্তত ২০ জন কংগ্রেস বিধায়ক। ফলে মধ্যপ্রদেশ সরকারের যে কোনও সময় পতন ঘটতে পারে। ২৩০ আসনের বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতায় প্রয়োজন ১১৬, সেখানে সুতোর ওপর দাঁড়িয়ে কংগ্রেস সরকার। ঘটনাচক্রে রাজস্থানেও গেহলটের দশা প্রায় একই ধরনের। ২০০ আসন বিশিষ্ঠ রাজস্থান বিধানসভায় কংগ্রেসের টিকিটে জিতে এসেছেন ১০০ জন বিধায়ক। আরও ৬ বিএসপির বিধায়ক দলে যোগ দিয়েঠেন। ছোট দল ও নির্দল মিলিয়ে আরও ১২ জন বিধায়ক কংগ্রেসকে সমর্থন করে। অন্যদিকে বিজেপির হাতে রয়েছে ৭২ জন বিধায়ক। সেখানেও নেতৃত্বের ইস্যুতে তাঁর সঙ্গে লড়াই চলছে নবীন কংগ্রেস নেতা পাইলটের। উচ্চাকাঙ্ক্ষী পাইলটও বারবার ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাজস্থানে ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকাও কম নয়। তাঁকে সেই কৃতিত্বের জন্য পুরস্কৃত করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কুরসি না পেলেও অন্তত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদটি ধরে রাখতে চান তিনি। আপাতত উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ দিয়ে তাঁকে সামলে রাখা হয়েছে। কিন্তু প্রতিনিয়ত দু’জনের দ্বন্দ্ব সামনে চলে আসছে। সূত্রের খবর, রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার আসনে প্রভাবশালী হীরে ব্যবসায়ী অরোরা পরিবারের এক সদস্যকে মনোনীত করতে চাইছেন গেহলট। তাতে তীব্র আপত্তি রয়েছে পাইলটের। তাঁর অভিযোগ পেয়েই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীকে সোনিয়া তলব করেছিলেন বলে সূত্রের খবর।
তবে, সিন্ধিয়া পর্বের মধ্যে পাইলট নিজে কংগ্রেসের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। পাইলট জানিয়েছেন, তিনি নিজে সিন্ধিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন। তাঁকে মেসেজ পাঠিয়েছেন। কিন্তু, তিনি কোনওরকম মেসেজের উত্তর দেননি। মধ্যপ্রদেশের এই সংকট মিটবে প্রার্থনায় টুইটও করেন তিনি। তাই, আপাতত পাইলটের দল ছাড়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছে কংগ্রেস। কিন্তু, বিজেপি যেভাবে উঠেপড়ে লেগেছে তাতে যে কোনও মুহূর্তে খেলা বদলে যেতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.