সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক, নয়াদিল্লি : আজ, শনিবার মাস পয়লায় সাধারণ বাজেট পেশ হতে চলেছে সংসদে। কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের দ্বিতীয় দফার প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট। দেশের ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙা করতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বাজেটে কী দাওয়াইয়ের কথা ঘোষণা করবেন, তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা দেশ।
বিভিন্ন দিক থেকে এবারের বাজেটকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে নানা মহল। তা যেমন অর্থনৈতিকভাবে, ততটাই আবার রাজনৈতিকভাবেও। কারও কারও মতে, এবারের সাধারণ বাজেট হবে নিছক সাদামাঠা। আবার অনেকেরই প্রত্যাশা, চমক থাকবে। যদিও ওয়াকিবহাল মহল বলছে, চমক দেওয়ার মতো তেমন কিছু সরকারের হাতে নেই। আগেই অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, বাস্তব পরিস্থিতি অনুধাবন করে সরকারকে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। সরকার সে পরামর্শ মানলে চমক বা জনপ্রিয় ঘোষণা থাকার সম্ভাবনা কম।
এক ‘কঠিন’ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলছে ভারতীয় অর্থনীতি।তাতে বিশ্ব অর্থনীতির প্রভাব কিছুটা রয়েছে। দেশের সার্বিক বৃদ্ধি হার পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে গিয়েছে। যা গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। দেশের বিনিয়োগের হারও গত ১৭ বছরে সবথেকে কম। নির্মাণক্ষেত্রের অবস্থাও তথৈবচ। সেখানে অবস্থা গত ১৫ বছরের মধ্যে সবথেকে খারাপ। একমাত্র কৃষিক্ষেত্রেই বৃদ্ধি হয়েছে, তবে তা এতটাই শ্লথ গতিতে যে তা-ও গত চার বছরের মধ্যে সবথেকে কম। মূল্যবৃদ্ধির চাপে সাধারণ মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। বেকারত্বর হার বেড়েছে। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও এতদিন পর্যন্ত কোনও দিশা দেখাতে পারেনি কেন্দ্র সরকার। এই পরিস্থিতিতে সবথেকে বড় প্রশ্ন এটাই যে, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে আসার জন্য সরকার কী করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার খরচ বৃদ্ধি করে এই ঝিমুনিকে থামাতে পারে। কিন্তু সরকারের আর্থিক ঘাটতি বেড়েই চলেছে। সরকারের কাছে বেশি খরচ করার মতো বেশি টাকাও নেই। আয় বাড়ানোর জন্য সরকারের তরফ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় ‘নীতিগত বিলগ্নিকরণ’ করার কথা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে।রেলভাড়া বৃদ্ধি, অনলাইন বুকিং-এ মাশুল বৃদ্ধি করার মতো পদক্ষেপও সাম্প্রতিককালে গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের পরিচালন খরচ কমিয়ে টাকা বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও যে খুব একটা সুরাহা হয়েছে তা হলফ করে বলা যায় না।
এই পরিস্থিতিতে বাজার অর্থনীতিকে চাঙা করাও সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। সেক্ষেত্রে, সরকার আয়করের ক্ষেত্রে বাজেটে কোনও ছাড় ঘোষণা করতে পারে, এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। আয়করের ক্ষেত্রে ছাড় দিলে দেশের বড় অংশের মানুষ খুশি হবেন ঠিকই কিন্তু তাতেও আবার সরকারের রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষেত্রে খারাপ প্রভাব পড়বে। তাই এক্ষেত্রেও সরকারের অবস্থা অনেকটা শাঁখের করাতের মতো।কর্মসংস্থান তৈরির জন্য বাজেটে নির্মলা কী ঘোষণা করেন সেই প্রশ্নও মানুষের মনে রয়েছে। এককথায় এবারের বাজেটে নির্মলার সামনে, কীভাবে অর্থনীতিকে মন্দার কবল থেকে দেশকে বার করে আনবেন এবং একইসঙ্গে মানুষকে খুশি করবেন সেই ব্যালান্স শিটটাই মেলানো সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.