কৃষ্ণকুমার দাস, যোধপুর: এর আগে তেইশবার ভোটে দাঁড়িয়েছেন এই একশো দিনের শ্রমিক। এবারও লড়ছেন। এই নিয়ে ২৪তম নির্বাচনী লড়াই। বিধানসভায় দশবার। লোকসভায় দশবার। বাকি চারবার পুরসভার ভোটে। তিনি নিজে গরিব। তাই গরিবের কষ্ট যন্ত্রণা উপলব্ধি করেন। আর এই কারণেই রাজস্থানে বসবাসকারী ৭০ শতাংশ গরিব ও চাষির কথা সংসদে পৌঁছে দিতে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিতার সিং। তবে ২০১৯-এ প্রার্থী হয়েই চমক অপেক্ষা করছিল তাঁর জন্য। রাজপুতের রাজ্যের বিত্তশালী গুরবীর সিং বিরল প্রজাতির সাদা ঘোড়া উপহার দিয়েছেন। ঘোড়ার দাম সওয়া এক কোটিরও বেশি। যাতে গরমে তিতারের ভোটপ্রচারে ভোটারের বাড়ি বাড়ি যেতে কষ্ট না হয়। সেই কারণেই এই ব্যবস্থা
২৪ বার ভোটে প্রার্থী হওয়া তিতার সিং পেশায় দিনমজুর। বয়স ৭৪। গত বছর ডিসেম্বর মাসে রাজস্থান বিধানসভা ভোটেও তিনি গঙ্গানগর থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। থাকেনও ওই বিধানসভার করণপুরের গুলাবেওয়ালা গ্রামে। বিকানের থেকে গঙ্গানগর খুব একটা দূরে নয়। গঙ্গানগরের একদিকে আমাদের পাঞ্জাব। অন্যদিক পাকিস্তানে। রাজস্থান বললেই আমাদের মাথা আসে, ঐতিহ্য। ইতিহাস। ঐর্শ্বয। রাজপরিবারের গরিমার কথা। এবছর লোকসভা ভোটেও এই রাজস্থানের প্রার্থী তালিকা দেখলে বোঝা যাবে সে কথা। এখানকার প্রার্থীরা সব হেভিওয়েট। শুধু নামে নয়, ব্যাংক ব্যালেন্সেও। কোথাও দাঁড়িয়েছেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে। তো কোথাও অলিম্পিকজয়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এমন একটা রাজ্যে লোকসভা ভোটে দরিদ্রতম নির্দল প্রার্থী হিসেবে আমজনতার প্রতিনিধি তিতার সিং। যাঁর দিনে আয় ১৪২ টাকা। দিন আনা দিন খাওয়ার সংসারে ভরসা ওইটুকুই। তবু ভোটে জেতার আসা ছাড়ছেন না তিতার।
তবে মনোনয়নপত্রে উল্লেখ করা সম্পত্তির পরিমাণ দেখেও অবাক হতে হয়। তিতারের হাতে নগদ মাত্র একহাজার টাকা। স্থাবর অস্থাবর মিলিয়ে মোট সম্পত্তি পরিমাণ দু’লক্ষ টাকা। রোজের যোগাযোগের জন্য নিজের কাছে একটা মোবাইলও নেই। ফোন নেই কেন? প্রশ্ন করলে তিতারের উত্তর, “সবার মধ্যে মিশে থাকাটাই তো মজা। সারা দিন মোবাইলে লেগে থাকলে সেটা হবে না। সবার সঙ্গে দেখা করব। ভোট চাইব।” লোকসভা যজ্ঞে তিতারের ভরসা ভাইপো যুগসের সিং। যুগসেরের নেতৃত্বে গোটা কর্মকাণ্ড পরিচালনা হচ্ছে। জেঠু-ভাইপো মিলে সামলেছেন মোট ১১টা নির্বাচন। কথায় কথায় যুগসের অকপটে স্বীকার করছেন, “জেঠু ভোটে দাঁড়ায়। ডোনেশনের টাকা তুলি আমি। তারপর ভোটে লড়াই। না হলে চলবে কী করে!”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.