সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাম্প্রতিক খলিস্তানি জঙ্গিদের হামলার প্রসঙ্গ তুলে পাকিস্তানকে চরম হুঁশিয়ারি দিলেন পাঞ্জাবের কংগ্রেস পরিচালিত সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। কাকতালীয়ভাবে ২৬/১১ হামলার ১০ বছর পূর্তির দিনেই তাঁর এই হুমকি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠল ভারত-পাক সম্পর্কের ক্ষেত্রে।
[শিশু পড়ুয়াদের স্কুল ব্যাগের বোঝা কমাতে নির্দেশিকা জারি কেন্দ্রের]
অমরিন্দর সিং বলেছেন, ভারতের সুবিশাল একটা দক্ষ সেনাবাহিনী আছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং ভীষণ শক্তিশালী সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে বলছি, আমরা যে কোনও সময় যুদ্ধের জন্য তৈরি। একজন প্রাক্তন সেনা অফিসার হিসাবে পাক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে প্রশ্ন করছি, বলতে পারেন, নিরীহ মানুষের উপর গ্রেনেড হামলা চালাতে কোনও দেশের সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণ দেয়? দিনের পর দিন কোনও সুস্থ দেশ সন্ত্রাসবাদীদের মদত দিয়ে প্রতিবেশী দেশে অনুপ্রবেশ করায়? সন্ত্রাসকে শিল্প আর জীবিকা করে তোলে কোনও দেশের সেনাবাহিনী? বিনা প্ররোচনায় প্রতিপক্ষের জওয়ানকে মারতে শেখায় কোনও সেনাবাহিনী? মুখোমুখি যুদ্ধ করার সাহস না দেখাতে পেরে প্রতিদিন কাপুরুষের মতো নাশকতা চালায় কারা? সীমান্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করতে মদত দেয়? পাঠানকোট-অমৃতসরে জঙ্গি পাঠানোয় সাহায্য করে? আসলে মিস্টার বাজওয়া আপনি এবং আপনার সেনাবাহিনী দুর্বল, কাপুরুষ। মনে রাখুন আমরা পাঞ্জাবি। আমরা শিখ। আমরা সন্ত্রাস, নাশকতা বরদাস্ত করি না। হিম্মত থাকলে সামনে এসে লড়ুন।
অমরিন্দর বলেন, প্রতি দিন জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাস হানা চালিয়েছে পাকিস্তানের সেনা। অন্য দিকে পঞ্জাবে অশান্তি পাকাতে ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। এই প্রসঙ্গে গত সপ্তাহে অমৃতসরের জঙ্গি হানার উদাহরণ টেনে আনেন অমরিন্দর। পাশাপাশি তিনি বলেন, আশা করি পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাঁর পরিস্থিতির কথা বুঝতে পারবেন। তিনি স্পষ্ট করেন, যত দিন পাকিস্তান শান্তির পথ বেছে নিচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত পাকিস্তানের সরকারি কোনও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেলেও যাবেন না। অমরিন্দর যেভাবে পাকিস্তানকে আক্রমণ করেছেন. তা ভারতের কোনও নেতা বা মন্ত্রী করেননি। তিনি রবিবারই বলেছিলেন, এমন একটিও দিন যাচ্ছে না যখন পাক সেনা ভারতীয় সেনাদের বাঙ্কার, ঘাঁটি লক্ষ্য করে গুলি বোমা ছুড়ছে না। প্রতিদিনই পাকিস্তান হামলা চালাচ্ছে। তাছাড়া পাঞ্জাবে খলিস্তানি আন্দোলন ও সন্ত্রাস ফিরিয়ে আনতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে কোনও অনুষ্ঠানে যাওয়ার মতো মানসিকতা আমার নেই।
পাকিস্তানে কর্তারপুর করিডরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ আগেই খারিজ করে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু প্রাক্তন ক্রিকেটার ও পাঞ্জাবের বর্তমান মন্ত্রী সিধু সাফ জানান, তিনি ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকার জন্য অবশ্যই কর্তারপুরে যাবেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় অমরিন্দর জানান, এটা রুচি ও চিন্তাধারার প্রশ্ন। আমার রুচি হচ্ছে না। যাব না। সিধুর চিন্তাধারা আলাদা। তাই উনি যাচ্ছেন। তবে ওঁর মনে রাখা উচিত, সন্ত্রাসের মদতদাতাদের জন্যই প্রতিদিন সীমান্তে জওয়ানরা মরছেন। সুষমা স্বরাজের পাশাপাশি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং এবং নভজ্যোৎ সিধুকে আমন্ত্রণ জানান পাক বিদেশমন্ত্রী কুরেশি। কিন্তু ব্যস্ত কর্মসূচির কারণে সুষমা যাচ্ছেন না।তাঁর তরফে পাঠানো হয়েছে দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। যাচ্ছেন না অমরিন্দরও। তবে সিধু যাচ্ছেন কর্তারপুরে। ইমরানের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে তিনি ইমরানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পাকিস্তানেও গিয়েছিলেন। তখনই পাক সেনাপ্রধানের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন।
[সাতসকালে কাশ্মীরে সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াই, নিকেশ ২ জেহাদি]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.